Tag Archives: infertility

Female Scientists Who Changed Human Fertility Forever

Miriam Menkinwas the first woman scientist to successfully fertilize a human egg through IVF– but few people know her name. Do you know her story?

Read more in Bengali

 IVF Guideline

মিরিয়াম মেনকিনই হচ্ছেন প্রথম মহিলা, যিনি সফল ভাবে টেস্ট টিউবের মধ্যে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর নিষেক ঘটিয়েছিলেন। আর এই ভাবেই বদলে দিয়েছিলেন জনন সংক্রান্ত চিকিৎসার সংজ্ঞাই। তবে কিছু হাতেগোনা লোকজন আজ তাঁর নাম জানেন।

মিরিয়ামের গল্প

১৯৪৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের এক মঙ্গলবারের এক রাত। কোলে কয়েক মাসের শিশুকন্যা। সবে দাঁত উঠতে শুরু করেছে একরত্তির। শিশুসন্তানের সেই যন্ত্রণা উপশম করার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এক মা। কার্যত সে দিন মেয়ের দেখভালের জন্য গোটা রাতটাই জেগে কাটাতে হয়েছিল ৪৩ বছর বয়সি ওই ল্যাব টেকনিশিয়ানকে। পরের দিন সকাল হতেই ল্যাবে চলে যান তিনি। অন্যান্য দিনের মতোই শুরু করলেন গবেষণা। একটি কাচের পাত্রে শুক্রাণুর মিশ্রণে রাখলেন নতুন একটি ডিম্বাণু, ঠিক যেমনটা রোজ করে থাকেন। সেই সঙ্গে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে যেতে লাগলেন, এ যাত্রা যেন শুক্রাণু আর ডিম্বাণু- এই দুইয়ে মিলে এক হয়ে যায়! আসলে হাভার্ডের ফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞ জন রকের এই ল্যাব টেকনিশিয়ান ও সহকর্মীর তখন একটাই ধ্যানজ্ঞান, মানুষের শরীরের বাইরেই ডিম্বাণুর নিষেক ঘটানো! যাতে বন্ধ্যত্বের চিকিৎসায় আমূল পরিবর্তন আসে। অন্যান্য দিন ডিম্বাণু ও শুক্রাণু আধ ঘণ্টা মতো একসঙ্গে রেখে দিতেন তিনি। কিন্তু এ বার তা হল না! আগের রাতে জাগার ক্লান্তি আর ডিম্বাণু-শুক্রাণুর নিষেক দেখতে বিভোর হয়ে গিয়ে সে দিন ঘড়ির দিকে তাকাতেই বেমালুম ভুলে গেলেন। যখন খেয়াল হল, তখন দেখলেন যে, ততক্ষণে এক ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। সে দিনকার মতো গবেষণা শেষ হল। এর পর শুক্রবার আবার তিনি ল্যাবে গেলেন। আর এসে যা দেখলেন, তাতে তার চক্ষু ছানাবড়া! তাঁর সামনে তখন যেন এক অপার বিস্ময়! তিনি দেখলেন, কোষগুলি ধীরে ধীরে বিভাজিত হতে শুরু করেছে। আর গোটা বিশ্বে এই প্রথম মানবদেহের বাইরে কাচের ভিতরেই ভ্রূণ তৈরি হল। আর তার প্রথম নিদর্শনের সাক্ষী রইলেন মিরিয়াম মেনকিন।
মেনকিন্সের এই কৃতিত্ব জনন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যে এক নতুন যুগ এনে দিয়েছিল, তা অনস্বীকার্য। তবে তাঁর সাফল্য কিন্তু কোনও দুর্ঘটনা ছিল না। আসলে তিনি ছিলেন এক জন বিজ্ঞানমনস্ক ও বিজ্ঞানে বিশ্বাসী বিজ্ঞানী গবেষক। কিন্তু সহকর্মী রকের মতো তাঁর নাম নিয়ে ঘরে ঘরে চর্চা হয় না। আজও অনেকে জানেনই না মেনকিনের নাম।

এর পর আসি ১৯৭৮ সালের কথায়। সেই বছরই বিশ্বের প্রথম টেস্ট টিউব বেবি লুইস ব্রাউন পৃথিবীর আলো দেখে। যদিও স্যর রবার্ট এডওয়ার্ডস এবং প্যাট্রিক স্টেপটোকেই আইভিএফ পদ্ধতির পথপ্রদর্শক বা জনক হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে তার সঙ্গে নার্স এবং এমব্রায়োলজিস্ট জিন মারিয়ান পার্ডি-র নাম অবশ্যই নিতে হবে। কারণ এ ক্ষেত্রে তাঁরও সমান অবদান রয়েছে। পার্ডিই প্রথম ব্যক্তি, যিনি এমব্রায়োনিক কোষ বিভাজনের প্রথম সাক্ষী ছিলেন। আর বিশ্বের প্রথম আইভিএফ ক্লিনিক, বর্নহল ক্লিনিকের সহ-প্রতিষ্ঠাতাও ছিলেন এই পার্ডি-ই। অথচ, পার্ডিরও নামও সে রকম ভাবে বহুল চর্চিত নয়। ফিজিওলজি এবং মেডিসিনে নিজের অবদানের জন্য এডওয়ার্ড নোবেল পুরস্কারে-এ ভূষিত হয়েছেন। অথচ, সেই কৃতিত্বের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন পার্ডি। দুঃখের বিষয় যে, পার্ডির অবদানও অবহেলিত হয়ে একটা অন্ধকার কোণে পড়ে থেকেছে! এ বার সময় এসেছে সেই পর্দাটা সরানোর। সারা বিশ্বের হিসেবে দেখা গিয়েছে, সেই ১৯৭৮ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত আইভিএফের মাধ্যমে প্রায় ৬০ লক্ষ বাচ্চা কনসিভ করা হয়েছে। আসলে আশ্চর্য বিষয়টা হচ্ছে যে, এক সময় আইভিএফের ক্ষেত্রে মহিলা বিজ্ঞানী-গবেষকরা প্রদীপের আলোর তলায় পড়ে ছিলেন, যা সাম্প্রতিক কালে ধীরে ধীরে আলোর সম্মুখে উন্মোচিত হচ্ছে! আর তাই আজ মানুষ জানতে পারছে, এই মহিলা বিজ্ঞানীদের নাম এবং তাঁদের কালজয়ী, যুগান্তকারী কৃতিত্বের কথা। যাঁদের জন্য আজ কোল ভরছে বন্ধ্যত্বে আক্রান্ত বহু মহিলার।

The Journey from Coping with Infertility to Embracing Fatherhood

Male infertility as much common as it is can be alarming – but through IVF, one can live his dream of embracing fatherhood.

Read more in Bengali

লকডাউনের শুরুর দিকেই মা হয়েছে শ্রীময়ী। ডেলিভারির সময় কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছিল বলে বেশ কিছু দিন ছোট্ট বিহুকে নিয়ে নার্সিং হোমেই থাকতে হয়েছিল শ্রীময়ীকে। এ দিকে বিহুর আসার আনন্দে তো সারা বাড়িতে খুশির ঢেউ! অধীর আগ্রহে সবাই ওদের জন্য অপেক্ষা করছে। কিন্তু শ্রীময়ীর মনে আনন্দ থাকলেও কোথাও যেন একটা কাঁটা খচখচ করছে। খালি মনে হচ্ছে, ওর স্বামী শ্রীদীপ্ত যেন  খুশি নয়!

কিন্তু শ্রীময়ীর সন্দেহের মেঘটা কেটে যায় সে দিনই, যে দিন ও বিহুকে নিয়ে বাড়িতে পা রাখে! ওদের জন্য মস্ত একটা সারপ্রাইজ প্ল্যান করেছিল শ্রীদীপ্তই। ছোট্ট বিহুর জন্য অন্দরসজ্জাই পাল্টে দিয়েছে তার বাবা। এত্ত এত্ত খেলনা, এত্ত জামাকাপড়— সব কিছু ছোট্ট পুতুলটার জন্য নিজে হাতে কিনেছে শ্রীদীপ্ত। এই সব কিছু দেখে আনন্দে কেঁদেই ফেলে শ্রীময়ী!

ওর মনে পড়ে যায় সেই দিনগুলোর কথা, যখন শ্রীদীপ্ত রাতের পর রাত ঘুমোত না। রাত জেগে পাগলের মতো নেট সার্চ করতো। কারণ সন্তান না আসার জন্য ফার্টিলিটি ক্লিনিকে গিয়ে একগাদা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ওরা জানতে পেরেছিল যে,  শ্রীদীপ্ত কখনও বাবা হতে পারবে না। কারণ ওর সিমেনে পর্যাপ্ত স্পার্ম নেই! শ্রীদীপ্ত তো মেনেই নিতে পারেনি। এমনটাও আবার হয় নাকি? 

ডাক্তারবাবুই অনেক বুঝিয়ে পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, শ্রীময়ী-শ্রীদীপ্ত চাইলে ডোনারের স্পার্ম নিয়ে আইভিএফ করা যেতে পারে। এর পর বাড়ি ফিরে রীতিমতো গুগলে এই বিষয়টা নিয়ে পড়াশোনা করে শ্রীদীপ্ত। বেশ কয়েক দিন লাগে বিষয়টা মেনে নিতে। শেষ পর্যন্ত শ্রীময়ীর মুখের দিকে তাকিয়ে রাজি হয়েছিল সে। আসলে ওর মেল ইগোয় বড্ড ধাক্কা লেগেছিল। শ্রীময়ী বুঝতে পারত, এই সিদ্ধান্তটা মন থেকে নেয়নি শ্রীদীপ্ত। কিন্তু আজ বুঝল যে, বিহুকে মন থেকেই মেনে নিয়েছে ওর বাবা!

শুধু শ্রীদীপ্তই নয়, এমন সমস্যায় পড়েছেন বহু পুরুষই। তাঁদের ধারণা, পুরুষ মানুষ চাইলেই বাবা হতে পারেন। এটা সম্পূর্ণ ভুল। কারণ মহিলাদের মতো পুরুষদেরও বন্ধ্যত্বের সমস্যা হয়। আর এটা মেনে নিতে সমস্যা হয় পুরুষদের। তাদের মেল ইগোতে আঘাত লাগে। এর জন্য দায়ী আমাদের সমাজ! কারণ সন্তান জন্মানোয় কোনও সমস্যা হলে বরাবর আমাদের সমাজ একটা মেয়েকেই দোষারোপ করে এসেছে। কিন্তু সময় এসেছে এই ভুলটা ভাঙানোর! 

জেনে রাখুন, প্রায় ১৫% দম্পতি বন্ধ্যত্বের সমস্যায় ভোগেন। অর্থাৎ এক বছর বা তার বেশি সময় ধরে কোনও দম্পতির মধ্যে  অসুরক্ষিত শারীরিক মিলন ঘটছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও সন্তান আসছে না। তা হলে বুঝতে হবে যে, ওই দম্পতি বন্ধ্যত্বের সমস্যায় ভুগছেন। আর এর তিন ভাগের এক ভাগ ক্ষেত্রে পুরুষদের সমস্যা দেখা যায়।

পুরুষদের বন্ধ্যত্ব আসলে কী? কম শুক্রাণু উৎপাদন, শুক্রাণুর অস্বাভাবিক রকম কার্যকলাপ অথবা শুক্রাণু তৈরিতে বাধা ইত্যাদি। কোনও অসুস্থতা, আঘাত-ক্ষত, জীবনযাত্রা বা লাইফস্টাইল— এগুলোই পুরুষ বন্ধ্যত্বে প্রভাব ফেলে। বহু চেষ্টার পরেও সন্তান না আসা খুবই হতাশাজনক, কিন্তু পুরুষ বন্ধ্যত্বের অনেক চিকিৎসাই আজকাল রয়েছে। ফলে এটা নিয়ে উদ্বেগর কোনও কারণ নেই।

পুরুষদের বন্ধ্যত্বের উপসর্গ:

পুরুষ বন্ধ্যত্বের প্রধান উপসর্গই হচ্ছে— সন্তান না আসা। তা ছাড়া সে রকম নির্দিষ্ট কোনও উপসর্গ নেই। তবে অনেকেই হয়তো এটা ছাড়া আর কোনও উপসর্গ সে ভাবে লক্ষ করেন না। কিছু কিছু উপসর্গও আছে, যা পুরুষদের বন্ধ্যত্বের ইঙ্গিত করে। সেগুলো হচ্ছে—

  • যৌনক্রিয়ায় সমস্যা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়— কম পরিমাণে বীর্যপাত, যৌনক্রিয়ায় অনীহা, লিঙ্গ শিথিলতা বা ইরেক্টাইল ডিসফাংশন প্রভৃতি।
  • শুক্রাশয় ও তার আশপাশে ব্যথা, ফুলে যাওয়া অথবা কোনও স্ফীতির উপস্থিতি।
  • বারবার হওয়া শ্বাসনালির সংক্রমণ।
  • গন্ধ অনুভব করতে না পারা।
  • অস্বাভাবিক রকম স্তনের বৃদ্ধি বা গাইনিকোম্যাস্টিয়া।
  • মুখ এবং দেহের লোম কমে যাওয়া, ক্রোমোসোমাল অথবা হরমোনাল অস্বাভাবিকতা।
  • স্বাভাবিকের থেকে স্পার্ম কাউন্ট কম থাকা।

পুরুষদের বন্ধ্যত্বের কারণ:

পুরুষদের ফার্টিলিটি জটিল একটা প্রক্রিয়া। আর এর কারণগুলোও একাধিক বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যদি সন্তান আসতে হয়, তা হলে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো ঠিকঠাক থাকতে হবে।

  • আপনাকে সুস্থ শুক্রাণু উৎপাদন করতে হবে। সেই সঙ্গে প্রাথমিক ভাবে বয়ঃসন্ধির সময় থেকে পুরুষদের জননাঙ্গ ঠিকঠাক ভাবে তৈরি হওয়া দরকার এবং তার বৃদ্ধিও ঠিকঠাক ভাবে হতে হবে। অন্তত পক্ষে যে কোনও একটা টেস্টিকলের ক্রিয়া ঠিক থাকতে হবে, আপনার দেহে টেস্টোস্টেরন তৈরি হতে হবে এবং স্পার্ম তৈরিতে দায়ী অন্যান্য হরমোনও সঠিক মাত্রায় নিঃসৃত হতে হবে।
  • শুক্রাশয়ে স্পার্ম তৈরি হয়। আর তা একটি সূক্ষ্ম টিউবের মাধ্যমে গিয়ে বীর্যের সঙ্গে মেশে এবং এর পর তা লিঙ্গ দিয়ে নির্গত হয়।
  • বীর্যের মধ্যে পর্যাপ্ত শুক্রাণু থাকতে হবে। যদি আপনার বীর্যে স্পার্ম কাউন্ট কম হয়, সে ক্ষেত্রে আপনার সঙ্গীর ডিম্বাণুর সঙ্গে আপনার শুক্রাণুর নিষিক্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
  • শুক্রাণুর কার্যক্ষমতা ঠিকঠাক থাকতে হবে। আর সেই সঙ্গে শুক্রাণু যেন জায়গা বদল করতে সক্ষম হয়। তবে যদি শুক্রাণুর ক্রিয়াকলাপে অস্বাভাবিকতা থাকে, সে ক্ষেত্রে ওই শুক্রাণু কোনও ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করতে পারবে না।

মেডিক্যাল কারণ:

ভ্যারিকোসিল

পুরুষদের টেস্টিকলগুলি ধরে রাখার জন্য চামড়ার যে আলগা একটা থলি থাকে, তার মধ্যে থাকা শিরাগুলি যখন ফুলে যায়, সেই অবস্থাকেই ভ্যারিকোসিল বলে। পায়ে মাঝে মধ্যে যে ভ্যারিকোস ভেইন দেখা যায়, ভ্যারিকোসিলও ঠিক তাই। কম শুক্রাণু তৈরি এবং শুক্রাণুর মান পড়ে যাওয়া এই ভ্যারিকোসিলের ফল এবং যা থেকে পুরুষদের বন্ধ্যত্বের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

সংক্রমণ

কিছু ধরনের সংক্রমণ স্পার্ম তৈরিতে ব্যাঘাত ঘটায়। আর কিছু কিছু সংক্রমণের ফলে স্থায়ী ভাবে টেস্টিকল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

অ্যান্টিবডি

এমন কিছু অ্যান্টিবডি আছে, যা শুক্রাণুকে আক্রমণ করতে পারে। এই অ্যান্টি-স্পার্ম অ্যান্টিবডিগুলি ইমিউন সিস্টেমেরই কোষ, যেগুলি স্পার্মকে ক্ষতিকর ভেবে ভুল করে। আর সঙ্গে সঙ্গে সেগুলোকে নিষ্কাশন করে।

টিউমার

ক্যানসার এবং নন ম্যালিগন্যান্ট টিউমারগুলি সরাসরি পুরুষ জননাঙ্গের ক্ষতি করে। কিছু গ্রন্থি আছে, যেখান থেকে হরমোন নিঃসৃত হয়, যা জননে সাহায্য করে। যেমন- পিটুইটারি গ্রন্থি। এই গ্রন্থিই অনেক সময় টিউমারের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর এর চিকিৎসায় সার্জারি, কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন করা হলে তা পুরুষ বন্ধ্যত্বের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

হরমোনের সমস্যা

হরমোনের ভারসাম্য না থাকলে ফার্টিলিটিতে তার প্রভাব পড়ে। কম টেস্টোস্টেরন এবং অন্যান্য হরমোনঘটিত সমস্যা বন্ধ্যত্বের অন্যতম কারণ।

স্বাস্থ্য, জীবনযাত্রা ও অন্যান্য কারণ:

ড্রাগের ব্যবহার

পেশি এবং পেশির শক্তি বাড়ানোর জন্য অ্যানাবলিক স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যার প্রভাব পড়ে টেস্টিকলে। তার ফলে স্পার্মের উৎপাদন ও স্পার্মের মান কমতে থাকে। কোকেন অথবা গাঁজার মতো মাদক দ্রব্যও স্পার্মের মান ও স্পার্মের সংখ্যা কমিয়ে দেয়।

মদ্যপান

মদ্যপান বা অ্যালকোহল সেবন টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। যার ফলে লিঙ্গ শিথিলতা বা ইরেক্টাইল ডিসফাংশনের মতো সমস্যা দেখা যায়, সেই সঙ্গে স্পার্ম উৎপাদনও কমে যায়। অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে লিভারের যে সব রোগ হয়, তা অনেক সময় ফার্টিলিটি সমস্যারও কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

ধূমপান

যে সব পুরুষ তামাক জাতীয় দ্রব্য সেবন বা ধূমপান করেন, তাঁদের স্পার্ম কাউন্ট উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যায়। শুধু তা-ই নয়, যাঁরা সরাসরি ধূমপান করেন না, অথচ প্যাসিভ স্মোকার, তাঁদেরও

ঝুঁকি থাকে।

ডিপ্রেশন

গবেষণা বলছে, পুরুষ সঙ্গী যদি ডিপ্রেশন বা হতাশায় ভোগেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর সঙ্গিনীর কনসিভ করতে সমস্যা দেখা দেয়। সেই সঙ্গে পুরুষদের ডিপ্রেশনের ক্ষেত্রে লিবিডো কম থাকায় যৌনক্রিয়াতেও সমস্যা হয়।

ওজন

অতিরিক্ত ওজন বাড়লে বা ওবেসিটি থাকলেও তার প্রভাব ফার্টিলিটিতে পড়ে। কারণ এর জেরে হরমোনের পরিবর্তন ঘটে, যা সরাসরি স্পার্ম বা শুক্রাণুর উপর প্রভাব ফেলে।  যা পুরুষদের ফার্টিলিটি কমিয়ে দেয়।

এই সমস্যা রুখতে কী কী মেনে চলবেন?

যদিও কয়েক ধরনের পুরুষ বন্ধ্যত্ব আটকানো যায় না। তবে কিছু কিছু বিষয় এড়ানো গেলে কয়েক ক্ষেত্রে পুরুষ বন্ধ্যত্ব প্রতিরোধ করা যাবে।

  • ধূমপান করবেন না।
  • মদ্যপান বা অ্যালকোহল সেবন এড়িয়ে চলুন। মদ্যপান করলেও তা নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
  • দেহের ওজন কম রাখতে হবে।
  • স্ট্রেস নেওয়া কমিয়ে ফেলতে হবে।

কোনও পুরুষ যদি বন্ধ্যত্বের সম্মুখীন হন, সে ক্ষেত্রে চিকিৎসা রয়েছে। তবে তাতেও যদি সমস্যার সমাধান না হয়, সে ক্ষেত্রে ডোনারের থেকে স্পার্ম সংগ্রহ করে আইভিএফ অথবা আইইউআই পদ্ধতিতে সন্তানের জন্ম দেওয়া যায়।

Unable to Conceive? Could be TB!

Genital Tuberculosis can affect the fallopian tubes, thereby causing infertility. Identifying the symptoms and getting tested can help with treatment.

Read more in Bengali

ব্যাপারটা শুরু হয়েছিল শ্রীকন্যার বিয়ের ঠিক দু’বছরের মাথায়। কনসিভ করতে চেষ্টা করেও বারবার ব্যর্থ হচ্ছিল ও। এ দিকে মাঝে মধ্যেই পেটে হালকা হালকা ব্যথা অনুভব করছিল। সঙ্গে চলছিল অনিয়মিত ঋতুস্রাব আর বুকে ব্যথাও। তবে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পর তিনি যা বললেন, তা শুনে রীতিমতো আকাশ ভেঙে পড়ল বছর আঠাশের মেয়েটির মাথায়! ডাক্তারবাবু জানিয়েছিলেন, জেনিটাল টিউবারকিউলোসিস (টিবি)-এ আক্রান্ত ও। ডাক্তারবাবু শ্রীকন্যাকে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে বলেছিলেন। তাতে জানা যায়, ও কখনও কনসিভ করতে পারবে না। কারণ প্রথম থেকে শ্রীকন্যা এই সমস্যাকে সে ভাবে গুরুত্ব দেয়নি। ফলে সময়মতো চিকিৎসাও হয়নি। জটিলতা এড়াতে ডাক্তারবাবু কিছু ওষুধ চালু করেছিলেন। কিন্তু মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল শ্রীকন্যা।

শুনে নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন! ভাবছেন, জেনিটাল টিবি আবার কী? কারণ এত দিন আমরা জেনে এসেছি যে, টিবি মানেই কাশি আর শ্লেষ্মার সঙ্গে রক্ত উঠছে। ফুসফুসে টিবি বা যক্ষ্মা বা পালমোনারি টিউবারকিউলোসিসের ক্ষেত্রে এমনটা হতে পারে। তবে টিবি বা যক্ষ্মা কিন্তু দেহের অন্যান্য অঙ্গেও হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, এই জেনিটাল টিবি কিন্তু মাথাব্যথার একটা বড় কারণ হিসেবে গণ্য হয়। কারণ এর তেমন কোনও লক্ষণ চোখে পড়ে না। কিন্তু জননতন্ত্রকে নষ্ট করতে থাকে। অর্থাৎ বুঝতেই পারছেন, এই ধরনের যক্ষ্মা কিন্তু বন্ধ্যাত্বের একটা বড় কারণ, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে।

সাম্প্রতিক এক সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, যে সব মহিলারা আইভিএফ চাইছেন, তাঁদের ২৫ শতাংশেরই জেনিটাল টিবি রয়েছে। আবার ফ্যালোপিয়ান টিউবের সমস্যার জেরে যে সব মহিলারা বন্ধ্যাত্বের সম্মুখীন হয়েছেন, তাঁদের ৫০ শতাংশেরই জেনিটাল টিবি আছে বলে ওই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে। ডাক্তারদের মতে, ১৫ থেকে ৪০ বছর বয়সি মহিলাদেরই এই জেনিটাল টিউবারকিউলোসিসে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। আবার ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (ICMR) ২০১৮ সালে এই বিষয়ে একটি গবেষণায় চালিয়েছে। তাতে জানা গিয়েছে, ভারতে আইভিএফ-এর জন্য আসা মহিলাদের ৫০ শতাংশেরও বেশি জনের জেনিটাল টিবি রয়েছে।

জেনিটাল টিউবারকিউলোসিস (টিবি) কী?

প্রথমেই জানিয়ে দেওয়া ভাল যে, টিবি একেবারেই ছোঁয়াচে রোগ নয়। আসলে মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস (Mtb) ব্যাকটেরিয়া থেকে টিবি হয়। প্রতি দিন সারা বিশ্বে প্রায় ৪৪০০ জন এই ঘাতক ব্যাকটেরিয়ার শিকার হয়। টিবি ব্যাকটেরিয়া প্রাথমিক ভাবে ফুসফুসকে আক্রমণ করে। তার পরে তা জরায়ু আর ফ্যালোপিয়ান টিউবে ছড়িয়ে পড়ে এবং সংক্রমণও ঘটায়। এই ব্যাকটেরিয়া জরায়ুতে আক্রমণ করলে ইউটেরাইন টিউবারকিউলোসিস (যা পেলভিক টিবি নামেও পরিচিত) হয়। যার ফলে প্রেগন্যান্সির সম্ভাবনা কমে। শুধু মহিলারাই জেনিটাল টিবি-তে আক্রান্ত হন না, পুরুষদের জননাঙ্গেও টিবি ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়তে পারে। কিন্তু কী ভাবে ছড়ায় এই ব্যাকটেরিয়া? ড্রপলেট ইনফেকশনের মাধ্যমে টিবি ব্যাকটেরিয়া শ্বাসনালি থেকে ধমনি দিয়ে যে ভাবে বুকের মধ্যে চলে যায়, ঠিক সে ভাবেই বুকের বদলে তা মহিলা ও পুরুষের জননাঙ্গে পৌঁছে যায়। তবে হ্যাঁ, এটা কখনই সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড সংক্রমণ নয়।

জেনিটাল টিবি উপসর্গ:

দেহের অন্যান্য অঙ্গে টিবি বা যক্ষ্মা হলে তা-ও বোঝা যায়, কিন্তু জেনিটাল টিবি-র লক্ষণগুলো সে ভাবে চোখে পড়ে না। তা হলে এটা বোঝা যাবে কী করে? তাই কিছু কিছু উপসর্গ দেখলে ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিতে ভুলবেন না। মহিলাদের ক্ষেত্রে সেই উপসর্গগুলো হল-

  • অনিয়মিত মাসিক
  • পেট ব্যথা
  • ক্রমাগত স্রাব (কখনও রক্ত থাকতে পারে আবার কখনও কখনও রক্ত থাকেও না
  • সঙ্গমের পর রক্তপাত

এ ছাড়া, যাঁরা বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা করাচ্ছেন, তাঁদের যদি ওষুধ দিয়েও ফল না হয়, তা হলে পরীক্ষা করে বুঝতে হবে, টিবি রয়েছে কি না।

জেনিটাল টিবি প্রভাব:

প্রথম স্তরে মহিলাদের জেনিটাল টিবি-র চিকিৎসা না হলে এটা ফ্যালোপিয়ান টিউবকেই নষ্ট করে দিতে পারে। জটিলতা বাড়লে পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে। এই টিবি-র ক্ষেত্রে জরায়ুর আস্তরণ এতটাই পাতলা হয়ে যায় যে, গর্ভপাতও হয়ে যেতে পারে। শুধু তা-ই নয়, এর থেকে বন্ধ্যাত্বও আসতে পারে।

রোগ নির্ণয়:

এই রোগে আক্রান্ত কি না, তা বোঝার ভাল উপায় হল- ঋতুস্রাবের সময় যে রক্ত শরীর থেকে বেরিয়ে যায়, সেই রক্ত সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা। এই রোগ নির্ণয়ের আরও ভাল একটি উপায় রয়েছে। সেটি হল- ঋতুস্রাব শুরুর ৭ দিন আগে ক্লিনিকে ডেকে হিস্টেরোস্কোপি করে এন্ডোমেট্রিয়াল টিবি কালচার করা। যদিও এর ফল পেতে একটু সময় লাগে। তা ছাড়া, টিবি পিসিআর পদ্ধতিও প্রয়োগ করা হয়। আবার আধুনিক চিকিৎসার ব্যাকটেক কালচার জেনিটাল টিবি নির্ণয়ের ক্ষেত্রে বেশ বিশ্বাসযোগ্য।

তবে হ্যাঁ, এই জেনিটাল টিবি থাকা সত্ত্বেও মহিলাই মা হতে পেরেছেন, এমন নজিরও রয়েছে। নিউ ইংল্যান্ডের এক মহিলারই তো জেনিটাল টিবি ছিল। এক বছর ধরে তিনি চিকিৎসা ও অ্যান্টিবায়োটিকের উপর ছিলেন। তার পরেও আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে সুস্থ বাচ্চার জন্ম দিয়েছেন ওই মহিলা।

Can Thyroid Disorders Affect Your Chances of Conceiving?

Undiagnosed thyroid can affect pregnancy but once the underactive or overactive thyroid is under control, you should be able to conceive successfully.

Read more in Bengali

ivf-thyroid-blog

বহু চেষ্টার পরেও যখন সোমঋতা কনসিভ করতে পারছিল না, তখন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে বেশ কিছু টেস্ট করিয়েছিল  ও। তাতে ধরা পড়ে, থাইরয়েডের সমস্য়া রয়েছে ওর। এই খবরটা শোনার পর থেকেই ভেঙে পড়েছিল বছর তিরিশের প্রাণোচ্ছল মেয়েটা। ভেবেছিল, কোনও দিনই হয়তো মা ডাকটা শোনা হবে না আর। কিন্তু ভুলটা ভেঙেছিলেন ডাক্তারবাবুই। জানিয়েছিলেন, থাইরয়েডের সমস্য়াতেও মা হওয়া যায়। তার জন্য় সঠিক চিকিৎসার মধ্য়ে থাকলেই হল। সেই সঙ্গে ডাক্তারবাবু এ-ও জানান যে, গোটা বিশ্বে প্রচুর মানুষ থাইরয়েডের সমস্য়ায় ভুগছেন। তার মধ্য়ে ভারতেই প্রায় ৪.২ কোটি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। আর আমাদের দেশে প্রতি ১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্য়ে ১ জনের হাইপোথাইরয়েড রয়েছে। ফলে এটা নিয়ে চিন্তার সে রকম কোনও কারণ নেই। আর সোমঋতার থাইরয়েডের সমস্য়া আগেই ধরা পড়েছে বলে অসুবিধাও হবে না। নিয়মিত ওষুধপত্র খেয়ে ডাক্তারের পরামর্শ মতো চললে ওর মা হওয়ার সাধ খুব শিগগিরিই পূরণ হতে চলেছে।

থাইরয়েড কী:

আমাদের গলার সামনের দিকে রয়েছে এই থাইরয়েড গ্ল্য়ান্ড। দেখতে অনেকটা প্রজাপতির মতো। আসলে এটি একটি অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি (গ্ল্য়ান্ড)। এর কাজ হল- আমাদের শরীরের মেটাবলিজমকে নিয়ন্ত্রণ করা। থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে টি থ্রি এবং টি ফোর নামে দু’টি হরমোন ক্ষরণ হয়। আর আমাদের মস্তিষ্কের ভিতরে থাকা পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয় থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন (টিএসএইচ), যা থাইরয়েড গ্রন্থির স্বাভাবিক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে। রক্তে টি থ্রি, টি ফোর হরমোন বেশি মাত্রায় থাকলে টিএসএইচ-এর পরিমাণ কমে যায়। অর্থাৎ এই হরমোনগুলির নিঃসরণের হার কম-বেশি হলেই শরীরে নানা রকম সমস্যা দেখা যায়।

থাইরয়েড সমস্য়ার ধরন:

  • হাইপোথাইরয়েডিজম
  • হাইপারথাইরয়েডিজম
  • গয়টার
  • থাইরয়েড নডিউলস
  • থাইরয়েড ক্যানসার

হাইপোথাইরয়েডিজম

থাইরয়েড গ্ল্য়ান্ডে পর্যাপ্ত পরিমাণে থাইরয়েড হরমোন উৎপন্ন না হলে, সেই অবস্থাকে হাইপোথাইরয়েডিজম বলা হয়। এর বেশ কিছু লক্ষণ থাকা সত্ত্বেও অনেক সময়ই তা বোঝা যায় না। হাইপোথাইরয়েডিজমের উপসর্গগুলির মধ্য়ে অন্য়তম-

  • হঠাৎ ওজন বেড়ে যাওয়া
  • ক্লান্তি বা অবসাদ 
  • কোনও কিছুতে মনোযোগ দিতে না পারা
  • শুষ্ক ত্বক
  • চুল ঝরে যাওয়া
  • কোষ্ঠকাঠিন্য
  • শীত শীত ভাব
  • পেশি আর জয়েন্টে ব্যথা 
  • বিষণ্ণতা
  • অনিয়মিত ঋতুস্রাব

শুধু তা-ই নয়, পরিবারে কারও থাইরয়েডজনিত অসুখ থাকলেও এটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার সদ্যোজাত শিশুর থাইরয়েড গ্ল্যান্ড তৈরি না হলে কনজেনিটাল হাইপোথাইরয়েডিজম দেখা যায়। সময়ে চিকিৎসা না হলে শিশুর বুদ্ধির স্বাভাবিক বিকাশ হয় না। 

হাইপারথাইরয়েডিজম

হাইপারথাইরয়েডিজমের কারণটা ঠিক উল্টো। অর্থাৎ থাইরয়েড গ্ল্য়ান্ডে অতিরিক্ত পরিমাণে হরমোন উৎপন্ন হলে, সেই অবস্থাকে হাইপারথাইরয়েডিজম বলা হবে। এর উপসর্গগুলো হল-

  • ওজন কমে যাওয়া 
  • গরম সহ্য করতে না পারা
  • হজমে সমস্যা
  • অল্পে হাঁপিয়ে ওঠা
  • বুক ধড়ফড় 
  • হাত-পা কাঁপা
  • দুশ্চিন্তা-অবসাদ
  • অতিরিক্ত ঘাম 

গয়টার

অনেক সময় থাইরয়েড গ্রন্থিটি অতিরিক্ত বড় হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে একে গয়টার বা গলগন্ড বলা হয়। যদিও গয়টারে সে ভাবে ব্য়থা হয় না। তবে তা অনেকটা বেড়ে গেলে কাশি হতে পারে। এমনকী খাবার গিলতে আর শ্বাস নিতেও সমস্য়া দেখা দেয়। গয়টারের প্রধান কারণ হল- খাদ্যাভ্য়াসে আয়োডিনের অভাব। সাধারণত গয়টারের মাপ, উপসর্গ ও কারণ দেখে চিকিৎসা করা হয়। ছোট গয়টারের ক্ষেত্রে সে রকম সমস্য়া হয় না। গয়টারের উপসর্গগুলির মধ্য়ে প্রধান-

  • গলার কাছটা ফুলে যাওয়া
  • গলায় অস্বস্তি ভাব
  • কাশি
  • গিলতে কষ্ট
  • শ্বাস নিতে কষ্ট

থাইরয়েড নডিউলস

থাইরয়েড গ্ল্য়ান্ডে অনেক সময় অস্বাভাবিক কোনও স্ফীতি অথবা দলা বা পিন্ড দেখা দেয়।  সেগুলোই নডিউলস। সব নডিউলস বোঝা যায় না। তবে কিছু ক্ষেত্রে নডিউলস অস্বাভাবিক বাড়লে তা বোঝা যায়। সে ক্ষেত্রে-

  • গলার কাছে ফোলা ভাব 
  • শ্বাসনালিতে চাপ দিলে যদি শ্বাসকষ্ট অথবা খাবার গিলতে সমস্য়া হয়
  • বহু ক্ষেত্রে আবার নডিউলস থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে থাইরক্সিন উৎপন্ন হয়।

অতিরিক্ত ওই থাইরক্সিনের প্রভাবে হাইপারথাইরয়েডিজমের উপসর্গও দেখা দেয়।

থাইরয়েড ক্য়ানসার

পুরুষ ও কমবয়সি মহিলাদের তুলনায় বয়স্ক মহিলারাই এই রোগে আক্রান্ত হন। আর পঞ্চান্ন বছরের নীচে এই রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায় খুবই কম সংখ্য়ক মানুষকে। থাইরয়েডে নির্দিষ্ট ধরনের কিছু কোষ থাকে, যা ক্য়ানসার আক্রান্ত। এই গোটা বিষয়টির উপরই নির্ভর করে থাইরয়েড ক্য়ানসারের ধরন।

থাইরয়েডের চিকিৎসা

শরীরে থাইরয়েডজনিত অসুবিধা রয়েছে কি না, তা বুঝতে বিভিন্ন রকম পরীক্ষা করা হয়। দেহে থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা জানতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। সাধারণত হাইপোথাইরয়েডিজমে টি থ্রি এবং টি ফোর কম হলে  টিএসএইচ- এর মাত্রা বেড়ে যায়। হাইপারথাইরয়েডিজমের ক্ষেত্রে এর ঠিক উল্টো হয়। অর্থাৎ রক্তে টি থ্রি ও টি ফোরের মাত্রা বেড়ে যায় এবং টিএসএইচ হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কম হয়। হাইপো অথবা হাইপার থাইরয়েডিজম ধরা পড়লে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নির্দিষ্ট ডোজের ওষুধ খেতে হবে। প্রথমে তিন মাস অন্তর, তার পরে ছয় মাস অন্তর রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। রক্ত পরীক্ষা না করিয়ে ওষুধের ডোজ বদলানো যাবে না। তবে হাইপারথাইরয়েডিজমের ক্ষেত্রে ওষুধে কাজ না করলে সার্জারি বা রেডিয়ো অ্যাক্টিভ আয়োডিনথেরাপি করা হয়।

আবার থাইরয়েড নডিউলস বা ওই ধরনের সমস্য়ার জন্য় ইমেজিং টেস্ট করা হয়। আলট্রাসাউন্ড টেস্ট করা হয় সে ক্ষেত্রে। তবে সেটা বিনাইন না ম্য়ালিগন্য়ান্ট- তা আলট্রা সাউন্ড টেস্টে বোঝা যাবে না।

গর্ভাবস্থা (প্রেগন্য়ান্সি) থাইরয়েড

গর্ভধারণের চেষ্টা করছেন, অথচ সফল হচ্ছেন না। সে ক্ষেত্রে নীচে উল্লিখিত লক্ষণগুলি যদি শরীরে অনুভব করেন, তা হলে সময় নষ্ট না করে ডাক্তার দেখিয়ে অবশ্য়ই থাইরয়েড টেস্ট করান। 

যে যে বিষয়গুলো লক্ষ করবেন

  • পরিবারে কারওর থাইরয়েড থাকলে
  • ছয় মাস ধরে সন্তানলাভের চেষ্টা করেও ব্য়র্থ 
  • জয়েন্টে ব্যথা, পেশীর ব্যথা, চুল ঝরে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, ক্লান্তি ও ঘুম ঘুম ভাব, লিবিডো হ্রাস, হার্ট রেট হ্রাস 
  • অনিয়মিত মাসিক 
  • মাসিকের সময় গুরুতর ব্যথা অনুভব করেন
  • আগে গর্ভপাত হয়ে থাকলে
  • ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পেলে

থাইরয়েডে আক্রান্ত মহিলার কনসিভ করার ক্ষেত্রে যে সমস্য়াগুলি হতে পারে অথবা তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের উপর যে প্রভাবগুলি পড়তে পারে, সেগুলি হল

  • কনসিভ করতে অসুবিধা
  • থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা ঠিকঠাক না থাকলে গর্ভপাতের ঝুঁকি
  • গর্ভস্থ শিশুর শারীরিক-মানসিক বিকাশে বাধা
  • প্রি-এক্লাম্পশিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়
  • থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা অস্বাভাবিক হলে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই প্রসব হওয়ার সম্ভাবনা 

গর্ভাবস্থায় থাইরয়েডের ওষুধ কি নিরাপদ

গর্ভাবস্থায় থাইরয়েডের ওষুধ একেবারেই নিরাপদ। কারণ প্রেগন্য়ান্সির প্রথম তিন মাস ভ্রূণের বিকাশ নির্ভর করে মায়ের থাইরয়েড গ্রন্থি নিঃসৃত  হরমোনের উপর। এই হরমোন গর্ভস্থ ভ্রূণের মস্তিষ্কের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অংশ গ্রহণ করে। তাই শিশু যাতে মায়ের শরীর থেকে পর্যাপ্ত থাইরয়েড হরমোন পায়, সে দিকে নজর রাখা উচিত। কনসিভ করার পরে মায়ের শরীরে যে সব হরমোন উৎপাদনকারী গ্রন্থি শিশুর বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ, তার মধ্যে থাইরয়েড অন্যতম। গর্ভধারণের প্রথম দিকে মায়ের সঙ্গে সঙ্গে শিশুর চাহিদা মেটাতে বেশি থাইরয়েড হরমোন প্রয়োজন, গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এই হরমোনের চাহিদা প্রায় ৫০% বেড়ে যায় এবং থাইরয়েডের ঘাটতিজনিত সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। তাই থাইরয়েড হরমোনের কার্যকারিতা স্বাভাবিক রাখতে ডাক্তারবাবুর কথা শুনে নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে।

এগুলো এড়াতে হলে সে ভাবেই প্ল্য়ানিং করতে হবে। কনসিভ করার আগে থাইরয়েড টেস্ট অবশ্য়ই করাতে হবে। আর আগে থেকে থাইরয়েডের সমস্য়া থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে নিয়মিত। আসলে থাইরয়েডজনিত সমস্য়াগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখলেই মা হতে সে রকম অসুবিধাই হয় না। তা হলে বুঝতেই পারছেন, থাইরয়েডের সমস্য়াকে লাগাম দিতে হলে একটু সচেতনতাই যথেষ্ট। ভয়ের কোনও কারণই নেই!

HIV-infected Women Can Also Give Birth To Healthy Children

With early detection and treatment during pregnancy, HIV positive women can give birth without passing on the disease to their baby.

Read more in Bengali

অনন্যা অন্য নারীদের মতো নন – তিনি এইচআইভি পজেটিভ। মা হতে পারবেন কিনা আর হলেও, সুস্থ সন্তানের জন্ম হবে কিনা তা নিয়ে অনন্যার মনে সংশয় ছিল।  তাই তিনি দ্বারস্থ হন এক এনজিওতে  এইচআইভি পজিটিভদের নিয়ে কাজ করে এমন এক বান্ধবীর কাছে। সেই বান্ধবীর কাছে অনন্যা জানতে পারে, এইচআইভি পজিটিভ নারীরাও সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতে পারেন। এরপর ওই বান্ধবীর সাথে দক্ষিণ কলকাতার এক হাসপাতালে যান। সেখানে এক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তার প্রথম সন্তানের জন্ম দেন। এর আরো চার বছর পর তার জন্ম নেয় দ্বিতীয় সন্তান। অনন্যার দুটি সন্তানই সুস্থ আছে এবং স্বামী, সন্তানদের নিয়ে ভালোই জীবন কাটাচ্ছেন অনন্যা।

অনন্যা ও তার স্বামী অরিজিৎ জানান, ‘আমরা যে কখনো মা বাবা হতে পারবো তা কল্পনাই করতে পারিনি।’

এইচআইভিতে আক্রান্ত নারীদের মা হওয়ার বিষয় স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে এইডস আক্রান্ত মা-ও চাইলে সন্তান জন্ম দিতে পারেন তবে সেজন্য কিছু ওষুধ আছে যা চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী খেয়ে চলতে হবে।

তারা এটাও জানিয়েছেন যে কোনও মায়ের এইচআইভি ভাইরাস থাকলে তার মাত্রা কত তারা প্রথমে সেটা পরীক্ষা করে দেখেন। এরপর তাকে এন্টি ভাইরাস ইনজেকশন দেওয়া হয় যাতে মায়ের থেকে শিশুর মধ্যে যখন ভার্টিক্যাল ট্রান্সমিশন ঘটে তখন ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে। আবার গর্ভধারণের পরও যদি এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয় শিশুটি তবে তাকে যাতে নিরাপদ রাখা সম্ভব হয়।

অনন্যা জানান, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকেই তার চিকিৎসকের কাছে নিয়মিত চেকআপ চালিয়ে গেছেন। এন্টি রেক্ট্রোভাইরাল মেডিসিন দেওয়া হয়েছিল তাকে। সন্তানের জন্মের পরপর রক্ত পরীক্ষা করার পর চিকিৎসকেরা নিশ্চিত হতে পেরেছিলেন যে শিশুটি এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত না।

তিনি বলেন, ‘আমার প্রথম সন্তান ছেলের জন্মের তিন সপ্তাহ পর তাকে আবার পরীক্ষা করা হলো। এভাবে দীর্ঘ ২০ মাস পরীক্ষা চলেছিল। শেষে ডাক্তাররা আমাকে জানায়, আমার সন্তান এইচআইভি ভাইরাসমুক্ত। দ্বিতীয় সন্তান, মেয়েটির বেলায়ও একই প্রক্রিয়া চলেছিল।’

কাজেই মনে রাখবেন, মায়ের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর এন্টি ভাইরাস টিকা দেওয়া হলে এই রোগ থেকে সন্তানকে মুক্ত রাখা যেতে পারে। এইচআইভি পজিটিভ বা এইডস আক্রান্ত হলেও নিয়মিত চিকিৎসা নিলে তিনি সুস্থ জীবনযাপন করতে পারেন।

সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর ব্যাপারে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন যে এইডসে আক্রান্ত বা এইচআইভি পজিটিভ মায়েরা সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারবে কিনা সেই নিয়ে বিভিন্ন মত রয়েছে। প্রথম কথা এই যে, বাচ্চাকে মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে কারণ না খাওয়ালে, শিশু পুষ্টিহীনতা, ডায়রিয়া সহ বিভিন্ন রোগের শিকার হতে পারে। তবে মায়ের বুকে যেন ক্ষত না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখা দরকার।

আরো জানতে চোখ রাখুন এই সেক্শনে|

How Serious Is Gestational Diabetes?

During pregnancy, some women may be at risk of gestational diabetes. The condition raises blood sugar levels, possibly leading to certain complications.

Read more in Bengali

মহিলারা সাধারণত দুইভাবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন। প্রথমটি গর্ভ সঞ্চারের আগে থেকেই ডায়াবেটিস, দ্বিতীয় গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস অনেক ক্ষেত্রেই সন্তান জন্মদানের পর সেরে যেতে পারে। পরবর্তীকালে এইসব মায়ের টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। গর্ভাবস্থায় মায়ের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী থাকে তাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলা হয়।

সকালে খালি পেটে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা ৬.১ মিলিমোল/লিটার (১১০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার) বা বেশী অথবা ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার ২ ঘণ্টা পরে ৭.৮ মিলিমোল/লিটার (১৪০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার) বা তার বেশী হলে সেটিকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হিসেবে সনাক্ত করা হয়।

ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগের সাথে আমরা কম-বেশি পরিচিত। কিন্তু গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি এবং এর জটিলতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত নই। এ ব্যাপারে আমার কিছু অভিজ্ঞতা বর্ণনা করছি:

মিসেস পৃথা মুখার্জী, বয়স ৩৭ বছর। প্রথম সন্তান জন্মের আট বছর পর পুনরায় গর্ভধারণ করেছেন, কিন্তু প্রথমবারের মতো চেকআপে এলেন সাড়ে সাত মাস গর্ভাবস্থায় (৩২ সপ্তাহ), পেট অস্বাভাবিক বড় হয়ে যাচ্ছে। প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যাই হয়নি তার তাই এবারো গর্ভাবস্থায় শুরুর থেকে কোনো ডাক্তার দেখানোর প্রয়োজন মনে করেননি তিনি। ডাক্তারের কথায় পরীক্ষা করে দেখা গেল রক্তে সুগার খালি পেটে ১৩ (13 mmol/L) ও খাবার গ্রহণের পর ২৬ (26 mmol/L); যা অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থেকেই সাধারণত হয়ে থাকে। আল্ট্রাসনোগ্রামে দেখা গেল যে সন্তানের জলের  (Amniotic fluid) পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। সাথে সাথেই দক্ষিণ কলকাতার এক হাসপাতালে ভর্তি হলেন. সেখানেই ইনসুলিনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা হলো|

একই ধরনের অন্য একজন রোগীর – সুনীতি সেন – সন্তান ডেলিভারির পর দেখা গেল, তার বাচ্চার দুধপান বা কান্নার সময় নীল হয়ে যায়। পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা গেল সন্তানের হার্টে একটি ফুটো। এটির একটি মূল কারণ হলো বাচ্চার মায়ের প্রথম তিন মাস অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস|

উপরোক্ত ঘটনাগুলি আপনাদের সাথে শেয়ার করার উদ্দেশ্য হলো ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি। বিশেষত গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে কোনোভাবেই অবহেলা করবেন না। সাথে এটাও বলি যে –  যার কখনোই ডায়াবেটিস ছিল না, তারও গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কাদের বেশি?

তুলনামূলকভাবে গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি তাদের যাদের:
১. পারিবারে যদি কারুর ডায়াবেটিস থাকে তাদের (মা-বাবা, ভাই-বোন, দাদু-দিদা)
২. আগে অধিক ওজনের (চার কেজি বা বেশি) সন্তান অথবা ত্রুটিযুক্ত সন্তান জন্মদানের ইতিহাস থাকলে
৩. অজ্ঞাত কারণে পেটে অথবা জন্মের পরপরই সন্তান মারা যাওয়ার ইতিহাস থাকলে
৪. বারবার সন্তান নষ্ট হওয়ার (অ্যাবরশন) ইতিহাস থাকলে
৫. গর্ভাবস্থায় সন্তানের জলের পরিমাণ (অ্যামনিয়াটিক ফ্লুইড) অতিরিক্ত হলে
৭. বয়স ৩০ বছরের বেশি বা শরীরের ওজন অতিরিক্ত হলে
৮. পূর্ববর্তী গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস থাকলে।

ডায়াবেটিসে মা গর্ভস্থ শিশুর সম্ভাব্য জটিলতা
১. অ্যাবরশন বা প্রথম তিন-চার মাসের মধ্যেই সন্তান নষ্ট হয়ে যাওয়া
২. রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে প্রি-একলাম্পসিয়া বা অন্যান্য জটিলতা
৩. ঘন ঘন ইনফেকশন হওয়া ও তার কারণে সময়ের আগে জল ভেঙে যাওয়া
৪. সন্তানের ওজন বেশি হওয়ায় ডেলিভারির জটিলতা
৫. ডেলিভারি-পরবর্তী ইনফেকশন, সন্তান পর্যাপ্ত দুধ না পাওয়া, ইত্যাদি।

গর্ভাবস্থার ডায়াবেটিসের লক্ষণ

গর্ভাবস্থার ডায়াবেটিসের এরম কোনো সুনির্দিষ্ট লক্ষণ নেই যা দেখে আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন যে আপনার ডায়াবেটিস হয়েছে। সাধারণত ২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভকালীন চেকআপে যখন রক্তের গ্লুকোজ মাপা হয় তখনই ডায়াবেটিস শনাক্ত হয়। কিন্তু আপনার ডাক্তার যদি মনে করেন আপনার ডায়াবেটিস হবার ঝুঁকি আছে তাহলে প্রথম চেকআপেই ডায়াবেটিস পরিক্ষা করার কথা বলতে পারেন। তবে কয়েকটি কারণ শনাক্ত করা হয়েছে যেই কারণে গর্ভকালীন সময় ডায়াবেটিস হতে পারে-

  • বার বার তৃষ্ণা পাওয়া
  • চোখে ঝাপসা দেখা
  • অতিরিক্ত প্রস্রাব হওয়া
  • অস্বাভাবিক ক্লান্তি
  • ঘনঘন যোনিমুখে থ্রাশ বা ইস্ট ইনফেকশন হওয়া

তবে এই লক্ষণগুলি বেশিরভাগ গর্ভবতী নারীদের অনেকের মধ্যেই দেখা যায়। তাই আপনার গর্ভাবস্থার ডায়াবেটিস হয়েছে কি না জানার একটাই উপায় – রুটিন ব্লাড গ্লুকোজ টেস্ট। গর্ভাধারণের পর প্রথম চেকআপে এই টেস্ট করা উচিত এবং গর্ভের ২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহে পুনরায় করা প্রয়োজন।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের চিকিৎসা

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে তা শুরুর থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা খুবই জরুরি কেননা, নিয়ন্ত্রণ না হলে অনেক ক্ষেত্রে সেটি জটিল আকার ধারণ করে।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মায়েদের এমন খাবার দিতে হবে যা তাদের রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। খাবারের পুষ্টিগুণের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। নিয়ম মাফিক খাদ্য গ্রহণ অতিঅবশ্যিক প্রয়োজনীয়।

যদি হাঁটতে কোনো নিষেধ না থাকে তবে হবু মাকে হাঁটার পরামর্শ দেওয়া হয়। অনেকেi মনে করেন, গর্ভকালীন হাঁটাহাঁটি করা যায় না। কিন্তু জটিলতা না থাকলে, আধা ঘণ্টা হাঁটতে পারেন তিনি।

এর মাধ্যমে মায়ের শরীর গর্ভধারণের জন্য তৈরী হয়। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রাও নিয়ন্ত্রিত থাকে। আর তাতেও যদি না হয়, তখন ইন্সুলিন নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মায়েদের অবশ্যই একজন গাইনোকোলজিস্টের ফলোআপে থাকতে হবে। আর গাইনোকোলজিস্ট যদি একা না পারে, তবে এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট বা ডায়বেটোলজিস্টের কাছেও যেতে হবে।

জন্মের পরপরই এবং প্রতি ১ ঘন্টা পর পর বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানো উচিৎ কারণ বুকের দুধ শিশুর রক্তে গ্লুকোজের সঠিক মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে আর সাথে সাথেই  রক্তে গ্লুকোজ পরিমাণমতো না থাকায় যেসব সমস্যা হয় তা থেকে বাঁচায়।

জটিলতা এড়াতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মনে রাখবেন:

১. পরিকল্পিত গর্ভধারণ ও গর্ভধারণের আগে প্রি-কনস্পেশন কাউন্সেলিং অর্থাৎ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া 

২. মাসিক বন্ধ হলে দ্রুত গর্ভাবস্থা নির্ণয়ের পরীক্ষা করা

৩. গর্ভাবস্থা নির্ণয়ের পরপরই নিয়মিত চেকআপে থাকা

৪. ডায়াবেটিস ধরা পড়লে ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক ডায়েট প্ল্যানিং এবং প্রয়োজনে নিয়মিত ইনসুলিন নেওয়া 

৫. ইনসুলিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে নিয়মিত রক্তের সুগার চেক করা

৬. গর্ভাবস্থায় ও পরবর্তী জটিলতা সম্পর্কে অবগত হওয়া এবং যেকোনো সমস্যায় ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া।

সব শেষে বলি, ডায়াবেটিস একটি জটিল কিন্তু নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ। প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে নিয়ন্ত্রণে রাখার মাধ্যমে মা ও সন্তানের জটিলতা অনেকাংশে কমানো সম্ভব।

Non-smokers Are Also At Risk Of Lung Cancer!

Lung cancer is no longer a smoker’s disease. Passive smoking, air pollution & other factors are to blame for the increasing number of cases in non-smokers.

Read more in Bengali

২৮ বছরের প্রিয়াঙ্কা পেশায় অ্যাডভারটাইজিং সংস্থার কর্মী৷ দক্ষিণ কলকাতার নামকরা এক বেসরকারি হাসপাতালে রক্তবমি নিয়ে ভর্তি হয়েছে এই এক সপ্তাহ আগে৷ তরুণীর  বাবাও মারা গিয়েছিলেন ২০১৬ সালে ফুসফুসের ক্যান্সারে| বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ধরা পড়ে, ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত এই স্মোকার|

শিপ্রা সেন ৫০ বছরের এক গৃহবধূ৷ খুসখুসে কাশি হয়েছিল আগের বছরের গোড়ায়| নানা ওষুধে কাজ না-হওয়ায় ফুসফুস রোগ বিশেষজ্ঞের দ্বারস্থ হন তিনি৷ ধরা পড়ে, ফার্স্ট স্টেজ ফুসফুসের ক্যান্সার৷ অথচ, ধূমপান দূরস্থান, কোনো দিন তামাকজাতীয় কোনও বস্তুও ছুঁয়েই দেখেননি তিনি৷ পরে জানা গেল যে ওনার স্বামী নিয়মিত ধূমপান করেন| অধিকাংশ সময় বাড়িতেই ধূমপান করেন তিনি|

বছর পঁয়ত্রিশের এক তরুণ | পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী৷ গত চার সপ্তাহ আগে থেকে বেশ কাশি হচ্ছে এই নন স্মোকারের অথচ ঠান্ডা ও লেগে নেই||চেস্ট এক্সরেতেই ধরা পড়লো ফুসফুসের ক্যান্সার| অদ্ভুত ব্যাপার যে কখনই সিগারেট ছুঁয়ে দেখেনি বা বাড়ির কাউকেই ছোট থেকে সিগারেট খেতে দেখেনি|

ধূমপান করেন যে পুরুষেরা, তাদের মধ্যে ক্যান্সারের শীর্ষে যে রয়েছে ফুসফুস ক্যান্সার, তা জানা ছিল৷ কিন্তু আজকাল নন স্মোকাররাও এই অসুখের শিকার হচ্ছেন। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে| কারণ –  ধূমপান এবং পরিবেশ দূষণ৷ প্যাসিভ স্মোকিং যদি এর একটি কারণ হয়, তবে আর একটি কারণ অবশ্যই পরিবেশ দূষণ।

এই কয়েকদিন আগেই খবরের কাগজে পড়লাম এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (এ কিউ আই) ২০০ মাত্রা ক্রস করে ফেলেছে | আর সেটির আরো অবনতি ঘটেছে দীপাবলির পর| রেডিওথেরাপিস্টরা বলছেন বায়ুদূষণের মাত্রা শহরে বহুগুণ বেড়েছে৷ কলকাতার বাতাসে যে ধূলিকণা ঘোরাফেরা করে, তার মধ্যে সালফারের উপস্থিতি বেশ বেশি৷ আর তা ফুসফুসে ক্যান্সার সৃষ্টির অন্যতম কারণ৷

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, ৩৪.৬% প্রাপ্ত বয়ষ্কদের মধ্যে ৪৭.৯ % পুরুষ ও ২০.৩% নারী ধূমপান করেন | যথেষ্ট সচেতনতা থাকা সত্ত্বেও কলেজ ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যেও ক্রমশই বেড়ে চলেছে ধূমপানের প্রবণতা রয়েছে যা যথেষ্ট উদ্বেগের৷

এই মারণরোগের বীজ রয়েছে মূলত তামাকের ধোঁয়ায় থাকা ক্ষতিকারক নিকোটিন-সহ অন্যান্য উপাদানে। আসলে, বিড়ি বা সিগারেটের একটানে শরীরে যতটা নিকোটিন পৌঁছয়, তার বিষমাত্রার হারও অত্যন্ত বেশি। ফুসফুসের ক্যানসার ঠেকাতে এই অভ্যাস ত্যাগ অবশ্যকর্তব্য।

একথা অবশ্য ঠিক যে আজ ধূমপান করলে কালই ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হবে সেরম কথা নেই৷ তবে পরিবারে ক্যান্সারের হিস্ট্রি থাকলে তার সঙ্গে স্মোকিং ক্যান্সারের সম্ভাবনাকে এক ধাক্কায় অনেকটাe বাড়িয়ে তুলতে পারে| ঠিক যেমনটা হয়েছিল ২৮ বছরের প্রিয়াঙ্কার ক্ষেত্রে৷

ধূমপান ত্যাগ তো করতেই হবে কিন্তু সেটি ছাড়াও নজর দিতে হবে কিছু খুঁটিনাটি দিকে| সেগুলি হলো:

  • ধূমপান বা তামাকজাত যে কোনও নেশা ছাড়ুন| প্রয়োজনে হলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিন।
  • নিজস্ব উদ্যোগে পরিবেশে গাছেদের উপস্থিতি বাড়ানোর প্রচেষ্টা করুন |
  • যতটা সম্ভব দূষণ এড়িয়ে থাকা যায় ততই ভাল| ভাইরাস-ব্যাকটিরিয়া প্রতিরোধী কোনও মাস্ক চিকিৎসকদের পরামর্শমতো ব্যবহার করতে পারেন, তবে মনে রাখবেন যে ভাইরাস-ব্যাকটিরিয়া ঠেকানো সম্ভব হলেও দূষণ পুরোপুরি ভাবে ঠেকানো যায় না।
  • মনে রাখবেন, এই অসুখ যদি এড়াতে চান তবে যে কোনও উপায়ে ফুসফুসে তামাকের ধোঁয়া যাওয়া প্রতিরোধ করতে হবে। কাজেই নিজে ধূমপান না করলেও যদি তামাকের ধোঁয়ার চারপাশেই থাকেন তবে সেই ভুল সংশোধন করে নিন আজই।
  • রেডন একটি নির্গন্ধ গ্যাস যেটা মাটির মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক ইউরেনিয়াম ক্ষয় হওয়ার কারণe উৎপন্ন হয়। যারা ধূমপান করেন না তাদের ফুসফুস ক্যান্সার হওয়ার একটি মুখ্য কারণ এই রেডন গ্যাস| অক্সিজেনের সাথে এই গন্ধহীন গ্যাস মিলিত হয়ে শ্বাসে প্রবেশ করে ক্যান্সারের ঝুঁকির বাড়িয়ে তোলে| অতিরিক্ত যানচলাচলযুক্ত জায়গা বা কলকারখানার কাছে বাস করলে এই গ্যাসের মাত্রা প্রায় পরীক্ষা করা খুবই দরকার।

সাধারণ ভাবে একটানা কাশি, কাশির সঙ্গে রক্ত ওঠা, শ্বাসকষ্ট, বুকে-কাঁধে ব্যথা, হঠাৎ অস্বাভাবিক ওজন হ্রাস, অতিরিক্ত ক্লান্তি, খাবারে অনীহা হল ফুসফুসের ক্যানসারের চেনা কিছু উপসর্গ। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফুসফুসের ক্যান্সার যতক্ষণে ধরা পড়ে, ততক্ষণে দেখা যায় অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে৷ তাই কাশি একটু বেশি দিন ধরে চললে টোটকায় সেটি কমবে এমন আশা না-করে অতি অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখিয়ে ফেলবেন ৷ আর সব শেষে বলি, ‘ক্যানসার মারণ রোগ’ এই ধারণা ভুলে যান| ঠিকঠাক চিকিৎসা হলে ও নিয়ম মানলে রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে, রোগমুক্তিও হয় অনেক ক্ষেত্রেই।

The Challenges Of Motherhood And Mental Health

New mommies often experience a mixture of emotions during pregnancy & following delivery. Here is why looking after maternal mental health should top the list.

Read more in Bengali

Maternal mental health

যেকোনো সন্তানপ্রত্যাশী নারীর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় তার গর্ভধারণের সময়। ফার্টিলিটি ট্রিটমেন্ট সাইকেল চলা, শারীরিক পরিবর্তন নিয়ে দুশ্চিন্তা, প্রসব-বেদনা বিষয়ক আতঙ্ক, নিজের কাছে একটু একটু করে বেড়ে উঠতে থাকা একটি নতুন প্রাণের অস্তিত্ব, মা হিসেবে নতুন একটি পরিচয় পাওয়া- সব মিলিয়ে নারীটির মন যেমন আনন্দে ভরে যায়; অপরদিকে সন্তান জন্মদান, তার ভবিষ্যতের কথা ভেবে অস্থিরতা, উদ্বেগ বা দুশ্চিন্তাওকম হয় না।

হবু মায়েদের শারীরিক পরিবর্তনগুলো সহজে চোখে ধরা দিলেও তাদের মানসিক অবস্থার এই পরিবর্তনগুলো অনেকটাই আড়ালে, অবহেলায় থেকে যায়। সমীক্ষা বলছে, প্রেগন্যান্সির সময়ে ও বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পরে প্রতি ১০ জনে ১ জনের বেশি মহিলা এই সমস্যার শিকার। অথচ এসব আবেগগুলো ঠিক সময়ে যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে গর্ভাবস্থায় ও তারপরেও মা ও শিশুর ওপরে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। 

একথা ঠিক, এইসব চিন্তাভাবনা চাইলেই সহজে মন থেকে দূর করা যায় না। একদিকে আনন্দ, খুশি, অসহায়তা আর অন্যদিকে ভয় আর দুশ্চিন্তা  থেকেই এই সমস্যা হয়। কাজেই কন্সিভ করার আগে মানসিকভাবে শক্ত হতে হবে। অতিরিক্ত আবেগ, স্ট্রেস, আর ডিপ্রেশন থেকে শরীর ও মন দুর্বল হয়ে পড়বে|

এমন কোনো সমস্যার শিকার যদি আপনি হন তাহলে হতাশ হবেন না বা নিজেকে দোষী ভাববেন না। কাজেই প্রতিটি হবু মা এমনকী বাবাদেরও জানা উচিত যে এই মানসিক অবস্থা শুধু একটি নারীর সমস্যা নয়। অনেকে নিজেরা কাটিয়ে উঠতে পারেন আবার অধিকাংশ মানুষ পারেন না। নিজে না পারলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অবস্যই নেবেন| তাহলেই দেখবেন আবার সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে অসুবিধে বোধ করছেন না।

মহিলাদের গর্ভাবস্থার সময়ে তার পরিবারের সদস্যদের ভূমিকা

আমার মতে ডাক্তারের আশ্বাসবাণীর সাথে সাথেই প্রয়োজন পরিবারের সদস্যদের সাহায্য। যেমন ধরুন, সন্তানসম্ভবা বা ফার্টিলিটি ট্রিটমেন্ট চলছে এমন মহিলার মা, শাশুড়ির, বা অন্যান্য কাছের মানুষদের উচিত তাকে বোঝানো যে ফার্টিলিটি ট্রিটমেন্ট আজ খুব স্বাভাবিক এক চিকিৎসা পদ্ধতি এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জটিলতাr সম্ভাবনা থাকে না।

মানসিকভাবে চাপমুক্ত থাকতে এবং মন ফুরফুরে রাখতে –

  • দিনের বেলা বিশ্রাম এবং রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম, দুটোই দরকার
  • অতিরিক্ত কাজের বোঝা ও ছুটোছুটি অতি অবশ্যই কমাবেন
  • মায়ের নিজের পুষ্টি চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে পরিমাণমতো সুষম খাদ্যগ্রহণ করা প্রয়োজনীয়
  • চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কিছু যোগব্যায়াম এবং শরীরচর্চা করতে পারেন
  • অবসরে নিজের পছন্দের কাজ করলে আপনার মন ভালো থাকবে
  • আপনার সঙ্গীর সাথে নিয়মিত সময় কাটান তাতে পারস্পরিক সম্পর্ক আরো দৃঢ় হয়ে উঠবে
  • ধাত্রীবিদ্যার বিশেষজ্ঞের সঙ্গেমনের চিন্তা, ভয় বা আশঙ্কা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলুন

সন্তানহীনতা থেকে শুরু হয় স্ট্রেস এবং সেটি ক্রমশ বাড়তে থাকে যখন শুরু হয় কোনো চিকিৎসাপদ্ধতি. একজন দম্পতির মনে ভীড় করে আসে নানা প্রশ্ন – আদৌ কি সন্তান হবে? খরচ কত? সাফল্য কি নিশ্চিত? প্রথমেই কি সাফল্য আসবে? 

এই কারণেই চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই একজন দম্পতির দরকার কাউন্সেলিং| জিন ও ক্রোমোজোমের কারণে বন্ধ্যত্বের সমস্যায় কাউন্সেলিং-এর গুরুত্ব সবথেকে বেশি। দম্পতি প্রথমে একজন ইনফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞের কাছে যান। সেই চিকিৎসক প্রয়োজন অনুযায়ী দম্পতিকে জেনেটিক কাউন্সেলরের কাছে পাঠান। কাউন্সেলর ওই দম্পতির রিপোর্ট দেখে বন্ধ্যত্বের কারণটি খুঁজে বের করেন। এরপর ধৈর্যের সঙ্গে দম্পতিকে বুঝিয়ে বলেন ও সমস্যা সমাধানের রাস্তা দেখান।

আই ভি এফ বা অন্য কোনো চিকিৎসাপদ্ধতির সাথে সাথেই চলতে থাকে কাউন্সেলিং| প্রথমবারের জন্য কাউন্সেলরের কাছে আসলেই দম্পতিকে বুঝিয়ে বলা হয় যে প্রথমবারের চেষ্টাতে সাফল্য নাও আসতে পারে। অধিকাংশই মানুষই বিষয়টা মেনে নেন। কোনও ক্ষেত্রে বারংবার চিকিৎসা অসফল হলে, সেটা মানতে সমস্যা হতেই পারে, তখন কাউন্সেলিংএর দ্বারা মানসিক অবস্থা স্থিতিশীল হয়|

All’s Well That Ends Well

Various factors can contribute to both male & female infertility, but there are ways to overcome these problems and enjoy the pleasure of parenthood.

Read more in Bengali

ivf specialist kolkata

সুমনার বয়স ছএিশ, দীপনের সাঁইত্রিশ।ওদের বিয়ে হয়েছে প্রায় সাত বছর।পরিবারের আর সবার মতো ওরাও একটি সন্তান চায়।গত তিন বছর যাবৎ একের পর এক ডাক্তার দেখিয়েছে, অনেক পরীক্ষা নিরিক্ষা করে সন্তান লাভে ব্যর্থ তারা ।

অতঃপর, সুমনা ওর এক বান্ধবীর চিকিৎসায় সফলতা দেখে অবশেষে এলো আমার কাছে। IVF চিকিৎসা করলো ওরা এবং মাএ চার মাসের মধ্যেই এখন সন্তানসম্ভবা সুমনা।

কথায় বলে না, সব ভালো যার শেষ ভালো…

আর আপনাদের বলছি, দাম্পত্য জীবনে সুমনার মতো এমন দুঃখজনক সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। আপনিও যদি এদের মধ্যে একজন হন তবে আর দেরী না করে এখনই সঠিক সিদ্ধান্ত নিন।

সব শেষে বলি, চিকিৎসায় বিলম্ব মানেই অহেতুক অর্থের অপচয় আর সেই সাথে অপার সম্ভাবনা কে অকালেই নষ্ট করা।