Category Archives: Pregnancy

Breaking the Silence around Miscarriage

In July 2020, Meghan Markle shared her “almost unbearable grief” at having lost her child to a miscarriage. The Duchess is not the first royal to share the experience of pregnancy loss as Sophie Wessex and Prince Edward earlier opened up about their traumatizing pregnancy loss.

The Duchess hoped that by sharing her story she might be able to remove some of the stigma that exists around pregnancy loss to this day. While, 2.6 million babies are stillborn and an estimated 85 percent of miscarriages happen before the 12th week of pregnancy every year, it is a topic that many still consider taboo.

What is a Miscarriage?

A miscarriage — in medical jargon indicates spontaneous abortion — is the unexpected end of a pregnancy before 20 weeks gestation. During a miscarriage, an embryo or foetus is spontaneously expelled from the uterus but is incapable of surviving in the outside world. After 20 weeks, the loss of a foetus is called a stillbirth but not a miscarriage.

What Causes a Miscarriage?

Miscarriages are not caused by moderate exercises, falls, sex and stress at work, fights with a spouse, or morning sickness. Rather, a miscarriage is a biological way of ending a pregnancy that is not going right.

The loss of the foetus or embryo and its expulsion from the uterus can be caused by factors, ranging from genetic defects to immune reactions in a mother’s body. Research suggests that half of all early miscarriages are connected to abnormal chromosomes.

Often, the causes of a miscarriage cannot be pinpointed at all. And in almost every case, there’s nothing the mother did wrong that led to the miscarriage or could have possibly done differently to prevent it.

Symptoms of Miscarriage

The symptoms of a miscarriage can vary from woman to woman and in some cases, can be completely different if some woman. But the most common signs include:

Vaginal bleeding can start as a dark brownish discharge. There may be blood clots or other tissue passing from your vagina with heavy bleeding. However, not all bleeding during pregnancy indicates a miscarriage. Especially when there ‘spotting’ characterized by a small amount of bleeding, many pregnancies continue to be healthy.

Cramps or other pain in the lower back, the pelvic area or abdomen

A decrease in the usual signs of pregnancy, such as breast tenderness and nausea may in rare cases signify miscarriage.

In addition to the possibility of miscarriage, pain or vaginal bleeding during pregnancy can be caused by other problems, such as an ectopic pregnancy. These symptoms should prompt an immediate consultation with your doctor, midwife, or nurse practitioner.

Miscarriage During the Pandemic

While there may be no way to erase the challenges of miscarriage during a pandemic, there are some steps that can be taken to cope and make you feel empowered.

  • Find alternative ways to connect: While the value of in-person contact cannot be replaced, consider other ways of connecting with friends and loved ones like virtual happy hours or virtual games such as trivia. It may also be helpful to set a regular time for these hangouts, such as Saturday night, to ensure you get that much needed time with your own people.
  • Allow yourself to grieve: As mentioned, in the backdrop of significant losses and suffering this year, it can feel difficult to grieve the loss of pregnancies. Attempting to hold yourself back from grieving is like fighting quicksand, you will find yourself stuck even more. Giving yourself the space to grieve will allow you to move forward in the healing process.
  • Connect to resources: Online support groups and miscarriage associations on Facebook and other online channels provide help. Additionally, it can be helpful to seek support through therapy. 
  • Find your anchor: Whenever you find yourself caught in a sea of intense emotions, it can be helpful to identify your anchor to keep you grounded. Your anchor maybe your loved ones, your passion or the most helpful coping skill you use like meditation or journaling.

While there’s so much we do not know about what the future holds for us, we know that there is support, we know that we are not alone, and that we’ll get through.

Is it possible to have a child if you test positive for HIV?

Worried over having a baby after testing positive for HIV? IVF can be a safe and effective way of choosing parenthood.

Read more in Bengali

এটা গত বছরের কথা| ডিসেম্বর নাগাদ আমার চেম্বারে দেখাতে এসেছিলেন এক চাকুরিরতা মহিলা ও তার হাসব্যান্ড। বিয়ের পর দীর্ঘদিন কেটে যাওয়ার পরও সন্তানধারণ করতে পারেননি তিনি। তবুও একবার মা ডাক শোনার আশায় চেম্বারে এসেছিলেন তিনি।

গোটা ব্যাপারটা শুনে প্রথমেই কয়েকটা পরীক্ষা করতে দিয়েছিলাম। রিপোর্ট আসার পর দেখা গেল যে ওর হাসব্যান্ড এইচ আই ভি পসিটিভ। তারপর বেশ কেয়েকদিন ওদের সাড়া শব্দ না পাওয়ার পর এবছর শুরুতে অবশ্য, মেয়েটি ফেরত এলো| এইবার একাই এলো| জানালো যে প্রথমে অনেকটা সময় লেগেছিলো দুঃসংবাদটি মেনে নিজেদের সামলাতে|

ওর হাসব্যান্ড চেয়েছিল দত্তক নিতে| সাময়িক স্বস্তি পেয়েছিল মেয়েটি সেইটা শুনে। কিন্তু অন্যদিকে ওর সব ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা, স্বপ্ন এক এক করে ভেঙ্গে যাচ্ছিল। বরাবরের ইচ্ছে ছিল নিজের গর্ভে সন্তান ধরবে কিনা| তাই আরেকবার চেষ্টা করতে চাইলো, জানতে চাইল কোনো উপায় আছে কিনা| আমি ওকে আশ্বাস দিলাম, জানালাম উপায় আছে| ওর কেসে সব থেকে কার্যকরী আই ভি এফ-ই হবে দেখে, এগোতে শুরু করলাম| এবং, একটু আর্শ্চয্য হলাম যখন দেখলাম প্রথম বারেই ও কন্সিভ করলো| এখন ওরা একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তানের মা বাবা|

এইচআইভি পজিটিভ হলে

আপনাদের বলি যে দম্পতির একজন এইচ আই ভি পসিটিভ মানে এই নয় যে স্বাভাবিক ভাবে গর্ভধারণ করা অসম্ভব| তবে জানা দরকার যে আপনার সঙ্গীর ভাইরাল লোড কতটা| তার সাথে আপনাদের এটাও জানতে হবে উনি অন্যান্য কোনো ইনফেকশন থেকেও ভুগছেন কিনা| উনি যদি কোনো ইনফেকশন থেকে না ভোগেন ও নিয়মিত হার্ট – হাই অ্যাক্টিভ অ্যান্টি-রেট্রোভাইরাল থেরাপি, তবে অসুরক্ষিত যৌন মিলনে এইচ আই ভি সংক্রমণের ঝুঁকি কম| তবে, অসুরক্ষিত যৌন মিলন শুধু মাত্র ওভুলেশন পিরিয়ড-এর জন্য| ডাক্তারি ভাষায় আমরা এটাকে টাইমড ইন্টারকোর্স বলে থাকি| কিন্তু আপনি যদি একেববারেই সংক্রমণের সম্ভবনা এড়াতে চান, তবে ফার্টিলিটি স্পেশালিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী আই ভি এফ বা ইকসি করতে পারেন|

এইচআইভি ভাইরাস মানেই এডস নয়

আপনার বা কারোর রক্তে এইচআইভি ভাইরাস পাওয়া গেলেই যে আপনি বা সে এডসে আক্রান্ত তা কিন্তু নয়। এডস তখনই হয়, যখন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে নানা রোগ বাসা বাঁধতে থাকে।

অসুখটা কী

এডস-এর ভাইরাসটি হিউম্যান ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস যা শ্বেত রক্তকণিকার সিডি-৪ লিম্ফোসাইট কোষকে খেয়ে ফেলে এবং তাতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। তখন যে কোনও ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়া সহজে বাসা বাঁধে। প্রথমে জ্বর, সর্দি কাশি ও পেট খারাপের মতো ছোটখাট অসুখ দিয়ে শুরু হয়। পরে জটিল রোগ বাসা বাঁধতে থাকে।

মূলত নিম্নলিখিত কয়েকটি উপায়ে এডস-এর ভাইরাস আমাদের শরীরে আসে,

১) অসুরক্ষিত যৌন সংসর্গ

২) ড্রাগ নেওয়ার সময়ে অন্যের ব্যাবরিত সূচ ব্যবহার করলে

৩) এইচআইভি পজিটিভ মানুষের রক্ত অন্যের শরীরে দেওয়া হলে

ভাইরাসের উপস্থিতি টের পাওয়া

এইচআইভি প্রাথমিক পর্যায়ে বোঝা যায় না এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে দেরি হয়ে যায় । তাই প্রত্যেকেকে এর লক্ষণ সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।

  • ক্লান্তি

যদি একজন ব্যক্তি সবসময় ক্লান্তি অনুভব করেন তবে এটিকে গুরুত্ব দিয়ে এইচআইভি পরীক্ষা করা উচিত।

  • পেশী প্রসারণ

কঠিন শারীরিক কাজ না করেই আপনার পেশীতে যদি অস্বস্তি হয়, এটাকে অবহেলা করবেন না। এটি এইচআইভি-র একটি লক্ষণ হতে পারে।

  • জয়েন্ট ব্যথা এবং ফোলা ভাব

বয়সের জন্য জয়েন্টগুলোতে ব্যথা এবং ফোলা ভাব স্বাভাবিক, তবে নির্দিষ্ট বয়সের আগেই জয়েন্ট ব্যথা এবং ফোলা হয় তবে হালকাভাবে নেবেন না কারণ এটি এইচআইভির লক্ষণ হতে পারে।

  • ওজন কমে যাওয়া

একজন এইচআইভি রোগীর ওজন প্রতিদিন হ্রাস পায়। যদি আপনার কোনও প্রচেষ্টা ছাড়াই ওজন কমতে থাকে তবে সতর্ক হবেন। শুকনো কাশি এবং বমি বমি ভাব

  • ক্রমাগত শুকনো কাশি এবং বমি বমি ভাব

ক্রমাগত কাশি কিন্তু কাশিতে রক্ত নেই। সর্বদা মুখ ব্যথা, খাওয়ার পরে বমি হওয়া বা বমি বমি ভাব এইচআইভির লক্ষণ হতে পারে।

  • ঠাণ্ডা লাগা

ঠান্ডা লাগতেই পারে কিন্তু যদি স্বাভাবিক আবহাওয়াতেও চট করে ঠান্ডা লেগে যায় তবে এটি এইচআইভির লক্ষণ হতে পারে।

  •  ঘুমানোর সময় অতিরিক্ত ঘাম হওয়া

যে কোনও তাপমাত্রায় যদি ঘুমের সময় ঘাম হতে থাকলে এটি এইডস এর লক্ষণ হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় বা জন্মের পর এইচ আই ভি আক্রান্ত মায়ের কি কি ব্যাবস্থা নেওয়া উচিত

মহিলাদের দেহে এইচ আই ভি ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করার মাধ্যমে শিশুকে সংক্রমনের হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব। ঠিক সময়ে পরীক্ষা করিয়ে ঠিক ঠাক সিদ্ধান্ত নিয়ে মহিলারা অনেক বেশী সুরক্ষিত থাকে। গর্ভাবতী মহিলাদের যেগুলি জানা উচিত তা হল:

  • সঠিক চিকিৎসা ও ওসুধ বাচ্ছার মধ্যে সংক্রমণের সম্ভবনা কমতে পারে।
  • নতুন মায়েদের জানতে হবে কিভাবে খাওয়ালে সে এইচ আই ভি থেকে মুক্তি পেয়ে সুস্থভাবে বাঁচতে পারে।
  • এইচ আই ভি যুক্ত মায়েদের গর্ভাবস্থায় ওসুধ ব্যবহার করা একান্ত প্রয়োজন কারণ যারা করেন না তাদের প্রায় ১/৩ অংশের বাচ্ছা এইচ আই ভি নিয়ে জন্মায় এবং ২/৩ অংশ বাচ্ছা ৫ বছরের মধ্যে মারা যায়।

সব শেষে বলি যে এইচ আই ভি মানেই যে মা বাবা হওয়ার সুখ অনুভব করতে পারবেন না – এমন নয়. কাজেই আগে থাকতে ভয় পাবেন না আর হাল ছেড়ে দেবেন না

Preparing for pregnancy when you have diabetes!

Diabetes and pregnancy doesn’t have to be a risky combination. You might just need to make some healthy changes or seek treatment before you get pregnant.

Read more in Bengali

যেসব ডায়াবেটিক নারী সন্তান ধারণ করতে ইচ্ছুক, তাঁদের জন্য প্রয়োজন অতিরিক্ত সতর্কতা ও সঠিক পূর্বপ্রস্তুতি। ডায়াবেটিসজনিত বিভিন্ন জটিলতা যেমন রেটিনা-কিডনি-স্নায়ু-রক্তনালির রোগ গর্ভকালীন জটিলতর হতে পারে। যাঁদের শর্করা নিয়ন্ত্রিত নয়, তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন গর্ভকালীন জটিলতার ঝুঁকি বেশি। যেমন: গর্ভপাত, প্রি- একলাম্পসিয়া, মেয়াদের আগেই প্রসব ইত্যাদি। মায়ের রক্তে উচ্চ শর্করা গর্ভের শিশুর বিভিন্ন ক্ষতি ঘটাতে পারে, যেমন: গর্ভে মৃত্যু, বিকলাঙ্গতা, স্থূলতা, প্রসবকালীন বিভিন্ন আঘাত ইত্যাদি।

ডায়াবেটিস থাকলে কি ফার্টিলিটি চিকিৎসার সমস্যা হ্রাস পায়?

  • পুরুষদের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস থাকলেও স্পার্ম উৎপাদনের সমস্যা খুব একটা সাধারণ নয় কিন্তু স্পার্মগুলির ডিএনএ ডিফেক্ট থাকতে পারে
  • কিছু ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্ব বা মিসক্যারেজের সম্ভাবনা রয়েই যায় কিন্তু তার মানে এই নয় যে ডায়াবেটিস থাকলেই হবু মায়েদের কমপ্লিকেশন হবে
  • মনে রাখবেন যে ডায়াবেটিস থাকলেও যদি আগে থেকে ব্লাডসুগার কন্ট্রোল করে, ফলিক অ্যাসিড খান তাহলে বেশ কিছু কমপ্লিকেশন এড়ানো যেতে পারে

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীর গর্ভধারণের প্রস্তুতি কমপক্ষে তিন মাস আগে শুরু করা জরুরি।

  • মানসিক প্রস্তুতি
    সন্তান ধারণের পরিকল্পনার সময়ই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মা এবং তাঁর পরিবারের জেনে নেওয়া উচিত কীভাবে ডায়াবেটিস ও গর্ভধারণ একে অপরকে প্রভাবিত করে, কী জটিলতা হতে পারে এবং সেগুলির প্রতিকারের উপায়।
  • সঠিক খাদ্যাভ্যাস
    সন্তান ধারণের আগে থেকেই শর্করা নিয়ন্ত্রণে সুষম কিন্তু পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে পুষ্টিবিদের সাহায্য নিন। গর্ভধারণ পরিকল্পনার শুরু থেকে গর্ভকালীন ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতিদিন ৫ মিলিগ্রাম ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট সেবন করুন, যা শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতা প্রতিরোধে উপকারী। রক্তশূন্যতা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  • সঠিক ওজন
    গর্ভকালীন বিভিন্ন জটিলতা এড়াতে সঠিক ওজনে থাকা জরুরি।
  • শর্করা নিয়ন্ত্রণ
    বাড়িতে নিয়মিত খাওয়ার আগে ও দুই ঘণ্টা পর রক্তের শর্করা মাপুন এবং এগুলো যথাক্রমে ৬ দশমিক ৫ এবং ৮ দশমিক ৫-এর নিচে রাখুন। শর্করার সঠিক মাত্রা অর্জন করতে গর্ভধারণের তিন মাস আগে থেকে মুখে খাওয়ার ওষুধ পরিবর্তন করে ইনসুলিন ব্যবহার শুরু করুন।
  • আনুষঙ্গিক ওষুধ
    যদি আপনি উচ্চরক্তচাপে ভোগেন, তবে গর্ভধারণের আগেই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ এবং জীবনধারার পরিবর্তনে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করুন। গর্ভধারণের সময় রক্তে চর্বি বা কোলেস্টেরল কমানোর ওষুধ খাওয়া যাবে না।
  • ডায়াবেটিসজনিত বিভিন্ন জটিলতা
    গর্ভধারণের আগে ডায়াবেটিসজনিত রেটিনার জটিলতা, কিডনি জটিলতা, বিভিন্ন রক্তনালির রোগ আছে কি না, তা শনাক্ত করে প্রয়োজনে চিকিৎসা নিন। গর্ভকালীন অবস্থায় এসব বেড়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। অ্যালকহল আর ধূমপান থেকে অবশ্যই দূরে থাকুন।

Can Thyroid Disorders Affect Your Chances of Conceiving?

Undiagnosed thyroid can affect pregnancy but once the underactive or overactive thyroid is under control, you should be able to conceive successfully.

Read more in Bengali

ivf-thyroid-blog

বহু চেষ্টার পরেও যখন সোমঋতা কনসিভ করতে পারছিল না, তখন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে বেশ কিছু টেস্ট করিয়েছিল  ও। তাতে ধরা পড়ে, থাইরয়েডের সমস্য়া রয়েছে ওর। এই খবরটা শোনার পর থেকেই ভেঙে পড়েছিল বছর তিরিশের প্রাণোচ্ছল মেয়েটা। ভেবেছিল, কোনও দিনই হয়তো মা ডাকটা শোনা হবে না আর। কিন্তু ভুলটা ভেঙেছিলেন ডাক্তারবাবুই। জানিয়েছিলেন, থাইরয়েডের সমস্য়াতেও মা হওয়া যায়। তার জন্য় সঠিক চিকিৎসার মধ্য়ে থাকলেই হল। সেই সঙ্গে ডাক্তারবাবু এ-ও জানান যে, গোটা বিশ্বে প্রচুর মানুষ থাইরয়েডের সমস্য়ায় ভুগছেন। তার মধ্য়ে ভারতেই প্রায় ৪.২ কোটি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। আর আমাদের দেশে প্রতি ১০ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্য়ে ১ জনের হাইপোথাইরয়েড রয়েছে। ফলে এটা নিয়ে চিন্তার সে রকম কোনও কারণ নেই। আর সোমঋতার থাইরয়েডের সমস্য়া আগেই ধরা পড়েছে বলে অসুবিধাও হবে না। নিয়মিত ওষুধপত্র খেয়ে ডাক্তারের পরামর্শ মতো চললে ওর মা হওয়ার সাধ খুব শিগগিরিই পূরণ হতে চলেছে।

থাইরয়েড কী:

আমাদের গলার সামনের দিকে রয়েছে এই থাইরয়েড গ্ল্য়ান্ড। দেখতে অনেকটা প্রজাপতির মতো। আসলে এটি একটি অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি (গ্ল্য়ান্ড)। এর কাজ হল- আমাদের শরীরের মেটাবলিজমকে নিয়ন্ত্রণ করা। থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে টি থ্রি এবং টি ফোর নামে দু’টি হরমোন ক্ষরণ হয়। আর আমাদের মস্তিষ্কের ভিতরে থাকা পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয় থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন (টিএসএইচ), যা থাইরয়েড গ্রন্থির স্বাভাবিক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে। রক্তে টি থ্রি, টি ফোর হরমোন বেশি মাত্রায় থাকলে টিএসএইচ-এর পরিমাণ কমে যায়। অর্থাৎ এই হরমোনগুলির নিঃসরণের হার কম-বেশি হলেই শরীরে নানা রকম সমস্যা দেখা যায়।

থাইরয়েড সমস্য়ার ধরন:

  • হাইপোথাইরয়েডিজম
  • হাইপারথাইরয়েডিজম
  • গয়টার
  • থাইরয়েড নডিউলস
  • থাইরয়েড ক্যানসার

হাইপোথাইরয়েডিজম

থাইরয়েড গ্ল্য়ান্ডে পর্যাপ্ত পরিমাণে থাইরয়েড হরমোন উৎপন্ন না হলে, সেই অবস্থাকে হাইপোথাইরয়েডিজম বলা হয়। এর বেশ কিছু লক্ষণ থাকা সত্ত্বেও অনেক সময়ই তা বোঝা যায় না। হাইপোথাইরয়েডিজমের উপসর্গগুলির মধ্য়ে অন্য়তম-

  • হঠাৎ ওজন বেড়ে যাওয়া
  • ক্লান্তি বা অবসাদ 
  • কোনও কিছুতে মনোযোগ দিতে না পারা
  • শুষ্ক ত্বক
  • চুল ঝরে যাওয়া
  • কোষ্ঠকাঠিন্য
  • শীত শীত ভাব
  • পেশি আর জয়েন্টে ব্যথা 
  • বিষণ্ণতা
  • অনিয়মিত ঋতুস্রাব

শুধু তা-ই নয়, পরিবারে কারও থাইরয়েডজনিত অসুখ থাকলেও এটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার সদ্যোজাত শিশুর থাইরয়েড গ্ল্যান্ড তৈরি না হলে কনজেনিটাল হাইপোথাইরয়েডিজম দেখা যায়। সময়ে চিকিৎসা না হলে শিশুর বুদ্ধির স্বাভাবিক বিকাশ হয় না। 

হাইপারথাইরয়েডিজম

হাইপারথাইরয়েডিজমের কারণটা ঠিক উল্টো। অর্থাৎ থাইরয়েড গ্ল্য়ান্ডে অতিরিক্ত পরিমাণে হরমোন উৎপন্ন হলে, সেই অবস্থাকে হাইপারথাইরয়েডিজম বলা হবে। এর উপসর্গগুলো হল-

  • ওজন কমে যাওয়া 
  • গরম সহ্য করতে না পারা
  • হজমে সমস্যা
  • অল্পে হাঁপিয়ে ওঠা
  • বুক ধড়ফড় 
  • হাত-পা কাঁপা
  • দুশ্চিন্তা-অবসাদ
  • অতিরিক্ত ঘাম 

গয়টার

অনেক সময় থাইরয়েড গ্রন্থিটি অতিরিক্ত বড় হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে একে গয়টার বা গলগন্ড বলা হয়। যদিও গয়টারে সে ভাবে ব্য়থা হয় না। তবে তা অনেকটা বেড়ে গেলে কাশি হতে পারে। এমনকী খাবার গিলতে আর শ্বাস নিতেও সমস্য়া দেখা দেয়। গয়টারের প্রধান কারণ হল- খাদ্যাভ্য়াসে আয়োডিনের অভাব। সাধারণত গয়টারের মাপ, উপসর্গ ও কারণ দেখে চিকিৎসা করা হয়। ছোট গয়টারের ক্ষেত্রে সে রকম সমস্য়া হয় না। গয়টারের উপসর্গগুলির মধ্য়ে প্রধান-

  • গলার কাছটা ফুলে যাওয়া
  • গলায় অস্বস্তি ভাব
  • কাশি
  • গিলতে কষ্ট
  • শ্বাস নিতে কষ্ট

থাইরয়েড নডিউলস

থাইরয়েড গ্ল্য়ান্ডে অনেক সময় অস্বাভাবিক কোনও স্ফীতি অথবা দলা বা পিন্ড দেখা দেয়।  সেগুলোই নডিউলস। সব নডিউলস বোঝা যায় না। তবে কিছু ক্ষেত্রে নডিউলস অস্বাভাবিক বাড়লে তা বোঝা যায়। সে ক্ষেত্রে-

  • গলার কাছে ফোলা ভাব 
  • শ্বাসনালিতে চাপ দিলে যদি শ্বাসকষ্ট অথবা খাবার গিলতে সমস্য়া হয়
  • বহু ক্ষেত্রে আবার নডিউলস থেকে অতিরিক্ত পরিমাণে থাইরক্সিন উৎপন্ন হয়।

অতিরিক্ত ওই থাইরক্সিনের প্রভাবে হাইপারথাইরয়েডিজমের উপসর্গও দেখা দেয়।

থাইরয়েড ক্য়ানসার

পুরুষ ও কমবয়সি মহিলাদের তুলনায় বয়স্ক মহিলারাই এই রোগে আক্রান্ত হন। আর পঞ্চান্ন বছরের নীচে এই রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায় খুবই কম সংখ্য়ক মানুষকে। থাইরয়েডে নির্দিষ্ট ধরনের কিছু কোষ থাকে, যা ক্য়ানসার আক্রান্ত। এই গোটা বিষয়টির উপরই নির্ভর করে থাইরয়েড ক্য়ানসারের ধরন।

থাইরয়েডের চিকিৎসা

শরীরে থাইরয়েডজনিত অসুবিধা রয়েছে কি না, তা বুঝতে বিভিন্ন রকম পরীক্ষা করা হয়। দেহে থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা জানতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। সাধারণত হাইপোথাইরয়েডিজমে টি থ্রি এবং টি ফোর কম হলে  টিএসএইচ- এর মাত্রা বেড়ে যায়। হাইপারথাইরয়েডিজমের ক্ষেত্রে এর ঠিক উল্টো হয়। অর্থাৎ রক্তে টি থ্রি ও টি ফোরের মাত্রা বেড়ে যায় এবং টিএসএইচ হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কম হয়। হাইপো অথবা হাইপার থাইরয়েডিজম ধরা পড়লে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নির্দিষ্ট ডোজের ওষুধ খেতে হবে। প্রথমে তিন মাস অন্তর, তার পরে ছয় মাস অন্তর রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। রক্ত পরীক্ষা না করিয়ে ওষুধের ডোজ বদলানো যাবে না। তবে হাইপারথাইরয়েডিজমের ক্ষেত্রে ওষুধে কাজ না করলে সার্জারি বা রেডিয়ো অ্যাক্টিভ আয়োডিনথেরাপি করা হয়।

আবার থাইরয়েড নডিউলস বা ওই ধরনের সমস্য়ার জন্য় ইমেজিং টেস্ট করা হয়। আলট্রাসাউন্ড টেস্ট করা হয় সে ক্ষেত্রে। তবে সেটা বিনাইন না ম্য়ালিগন্য়ান্ট- তা আলট্রা সাউন্ড টেস্টে বোঝা যাবে না।

গর্ভাবস্থা (প্রেগন্য়ান্সি) থাইরয়েড

গর্ভধারণের চেষ্টা করছেন, অথচ সফল হচ্ছেন না। সে ক্ষেত্রে নীচে উল্লিখিত লক্ষণগুলি যদি শরীরে অনুভব করেন, তা হলে সময় নষ্ট না করে ডাক্তার দেখিয়ে অবশ্য়ই থাইরয়েড টেস্ট করান। 

যে যে বিষয়গুলো লক্ষ করবেন

  • পরিবারে কারওর থাইরয়েড থাকলে
  • ছয় মাস ধরে সন্তানলাভের চেষ্টা করেও ব্য়র্থ 
  • জয়েন্টে ব্যথা, পেশীর ব্যথা, চুল ঝরে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, ক্লান্তি ও ঘুম ঘুম ভাব, লিবিডো হ্রাস, হার্ট রেট হ্রাস 
  • অনিয়মিত মাসিক 
  • মাসিকের সময় গুরুতর ব্যথা অনুভব করেন
  • আগে গর্ভপাত হয়ে থাকলে
  • ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পেলে

থাইরয়েডে আক্রান্ত মহিলার কনসিভ করার ক্ষেত্রে যে সমস্য়াগুলি হতে পারে অথবা তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের উপর যে প্রভাবগুলি পড়তে পারে, সেগুলি হল

  • কনসিভ করতে অসুবিধা
  • থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা ঠিকঠাক না থাকলে গর্ভপাতের ঝুঁকি
  • গর্ভস্থ শিশুর শারীরিক-মানসিক বিকাশে বাধা
  • প্রি-এক্লাম্পশিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়
  • থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা অস্বাভাবিক হলে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই প্রসব হওয়ার সম্ভাবনা 

গর্ভাবস্থায় থাইরয়েডের ওষুধ কি নিরাপদ

গর্ভাবস্থায় থাইরয়েডের ওষুধ একেবারেই নিরাপদ। কারণ প্রেগন্য়ান্সির প্রথম তিন মাস ভ্রূণের বিকাশ নির্ভর করে মায়ের থাইরয়েড গ্রন্থি নিঃসৃত  হরমোনের উপর। এই হরমোন গর্ভস্থ ভ্রূণের মস্তিষ্কের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অংশ গ্রহণ করে। তাই শিশু যাতে মায়ের শরীর থেকে পর্যাপ্ত থাইরয়েড হরমোন পায়, সে দিকে নজর রাখা উচিত। কনসিভ করার পরে মায়ের শরীরে যে সব হরমোন উৎপাদনকারী গ্রন্থি শিশুর বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ, তার মধ্যে থাইরয়েড অন্যতম। গর্ভধারণের প্রথম দিকে মায়ের সঙ্গে সঙ্গে শিশুর চাহিদা মেটাতে বেশি থাইরয়েড হরমোন প্রয়োজন, গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এই হরমোনের চাহিদা প্রায় ৫০% বেড়ে যায় এবং থাইরয়েডের ঘাটতিজনিত সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। তাই থাইরয়েড হরমোনের কার্যকারিতা স্বাভাবিক রাখতে ডাক্তারবাবুর কথা শুনে নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে।

এগুলো এড়াতে হলে সে ভাবেই প্ল্য়ানিং করতে হবে। কনসিভ করার আগে থাইরয়েড টেস্ট অবশ্য়ই করাতে হবে। আর আগে থেকে থাইরয়েডের সমস্য়া থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে নিয়মিত। আসলে থাইরয়েডজনিত সমস্য়াগুলিকে নিয়ন্ত্রণে রাখলেই মা হতে সে রকম অসুবিধাই হয় না। তা হলে বুঝতেই পারছেন, থাইরয়েডের সমস্য়াকে লাগাম দিতে হলে একটু সচেতনতাই যথেষ্ট। ভয়ের কোনও কারণই নেই!