Identifying the Early Signs of Infertility in Women

Irregular periods & inability to ovulate could indicate female infertility. Consult with a doctor and get tested at the earliest.

Read more in Bengali

বন্ধ্যত্ব! শব্দটা শুনেই নির্ঘাত মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল! কি তাই তো? ভেঙে পড়ারই কথা! কারণ এখনও বন্ধ্যত্ব নিয়ে বেশির ভাগ মানুষের ধারণা পরিষ্কার নয়।
তাই সবার আগে জেনে নিতে হবে, বন্ধ্যত্ব আসলে কী? ধরুন, কোনও প্রোটেকশন ছাড়াই আপনি নিয়মিত আপনার সঙ্গীর সঙ্গে শারীরিক ভাবে মিলিত হচ্ছেন, অথচ কনসিভ করতে পারছেন না। এ ভাবে ছ’মাস অথবা এক বছর কাটলে কিন্তু বুঝতে হবে যে, আপনি বন্ধ্যত্বের সমস্যায় ভুগছেন। বয়সের সঙ্গেও কিন্তু বন্ধ্যত্বের যোগ রয়েছে। যেমন- বয়স ৩৫ পেরিয়ে যাওয়ার পর ছ’মাস অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেও কনসিভ করতে না পারলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
অনেকেই বলে থাকেন, মা হওয়ার আদর্শ বয়সসীমা হচ্ছে ২৩-৩০ বছর। আসলে তার পর ডিম্বাণুর মান
পড়তে থাকে ক্রমশ। তাই অনেক ক্ষেত্রেই ডিম্বাণু ফ্রিজ করে রাখারও পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
অল্প বয়সের সুস্থ, সবল ডিম্বাণু সংরক্ষিত থাকলে তা পরে ব্যবহার করা যায়। আর রিপোর্ট বলছে, প্রতি
১০ জন দম্পতির মধ্যে ১ জন বন্ধ্যত্বের সমস্যায় ভোগেন। তবে বন্ধ্যত্বের সমস্যায় ভুগলে মা হওয়া
যাবে না, এই ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল। আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে বন্ধ্যত্বের সঠিক চিকিৎসা হলে কিন্তু
সহজেই মা হতে পারবেন।
এটা তো নয় গেল! কিন্তু এ বার যে প্রশ্নটা আসে, সেটা হল- বন্ধ্যত্বের আঁচ কি আগে থেকে পাওয়া যায়?
কিছু কিছু লক্ষণ দেখে অবশ্যই আগে থেকে বন্ধ্যত্বের আঁচ পাওয়া সম্ভব। তবে তার আগে জেনে নিতে
হবে কনসিভ করার জন্য কোন কোন বিষয় অত্যন্ত জরুরি।

কনসিভ করতে যে বিষয়গুলি জরুরি:

  • নিয়মিত মাসিক চক্র
  • মাসের নির্দিষ্ট সময়ে ওভ্যুলেশন
  • ওই সময় নিয়মিত সহবাস
  • সুস্থ ফ্যালোপিয়ান টিউব ও জরায়ু
  • সঙ্গীর থেকে শক্তিশালী স্পার্ম

ফলে বুঝতেই পারছেন, মাসিক চক্র ও ওভ্যুলেশনে সমস্যা হলে কিন্তু সেটাকে বন্ধ্যত্বের উপসর্গ বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। তা ছাড়াও বন্ধ্যত্বের আরও কিছু উপসর্গ রয়েছে।

বন্ধ্যত্বের আঁচ কী ভাবে পাওয়া যায়?

  • পলিসিস্টিক ওভারি একটি লাইফস্টাইল ডিসঅর্ডার। অনিয়মিত ঋতুস্রাব, ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ, ক্লান্তি, তলপেটে ব্যথা- এগুলো পলিসিস্টিক ওভারির উপসর্গ। এই রোগের কারণে শরীরে হরমোনের তারতম্য ঘটে এবং ওভারিতে ছোট ছোট সিস্ট থাকার কারণে কনসিভ করতে সমস্যা হয়। তবে একটু সচেতন হলেই এটা কমানো সম্ভব।
  • ওভারিতে টিউমার থাকলেও কনসিভ করতে অসুবিধা হয়। এটাও বন্ধ্যত্বের অন্যতম উপসর্গ।
  • এন্ডোমেট্রিওসিসের সমস্যা থাকলেও কিন্তু বন্ধ্যত্বের সম্মুখীন হতে পারেন। পিরিয়ডসের সময় অসহ্য তলপেটে যন্ত্রণা, বেশি রক্তপাত কিন্তু এন্ডোমেট্রিওসিসের লক্ষণ। প্রথম থেকেই যদি এই সমস্যা থাকে, তা হলে কিন্তু দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
  • থাইরয়েড গ্রন্থির অস্বাভাবিকতা থাকলেও গর্ভবতী হতে সমস্যা হবে। আসলে থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে রোগী অনিয়মিত মাসিক চক্র, আচমকা ওজন বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যার সম্মুখীন হন। তাই এই সমস্যা থাকলে কিন্তু সতর্ক হতে হবে।
  • জেনিটাল টিউবারকিউলোসিস (টিবি) থেকেও আসতে পারে বন্ধ্যত্ব। টিবি ব্যাকটেরিয়া প্রথমে ফুসফুসকে আক্রমণ করে। পরে তা জরায়ু ও ফ্যালোপিয়ান টিউবে ছড়িয়ে পড়ে সংক্রমণ ঘটায়। এর উপসর্গগুলো সে ভাবে চোখে পড়ে না। তবে অনিয়মিত মাসিক, ক্রমাগত স্রাব, পেট ব্যথা- এ সব থাকলে সাবধান হতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
  • ইউটেরাস নন-ক্যানসার টিউমার বা ফাইব্রয়েড হলেও কিন্তু সাবধান। মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত, অনেক দিন ধরে ঋতুস্রাব চলা, পেলভিক অঞ্চলে ব্যথা- এগুলো ফাইব্রয়েডের লক্ষণ। তবে অনেক ক্ষেত্রে এর উপসর্গ ফুটেও ওঠে না।
  • অনেক সময় জরায়ু ও ফ্যালোপিয়ান টিউবে সংক্রমণ হয়ে থাকে। ডাক্তারি ভাষায় যাকে পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ বলা হয়। যার থেকে আসতে পারে বন্ধ্যত্ব।
  • অতিরিক্ত স্ট্রেস, ওজন বেড়ে যাওয়া, অ্যালকোহল সেবন, ধূমপান, ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে ওষুধ খাওয়া- এগুলোও কিন্তু বন্ধ্যত্বের কারণ। সে ক্ষেত্রে নেশা ছাড়তে হবে এবং জীবনযাত্রার ধরন পাল্টে ফেলতে হবে।